পাতা:বিশ্বপরিচয়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরমাণুলোক

মেরেছে। হেলিয়ম-গ্যাসের মধ্যে প্রচ্ছন্ন দুরন্ত জ্বলন-চণ্ডী নেই, অথচ হাইড্রোজেন ছাড়া সকল গ্যাসের চেয়ে এ হালকা। তাই জাহাজ ওড়ানোকে নিরাপদ করবার জন্যে তারি ব্যবহার চলতি হয়েছে। চিকিৎসাতেও কোনো কোনো রোগে এর প্রয়োগ শুরু হোলো।

 পূর্বেই বলা হয়েছে পজিটিভ চার্জওয়ালা পদার্থ ও নেগেটিভ চার্জওয়ালা পদার্থ পরস্পরকে কাছে টানে কিন্তু একই জাতীয় চার্জওয়ালারা পরস্পরকে ঠেলে ফেলতে চায়। যতই তাদের কাছাকাছি করা যায় ততই উগ্র হয়ে ওঠে তাদের ঠেলার জোর। তেমনি বিপরীত চার্জওয়ালারা যতই পরস্পরের কাছে আসে তাদের টানের জোর ততই বেড়ে ওঠে। এই জন্যে যেসব ইলেকট্রন কেন্দ্রবস্তুর কাছাকাছি থাকে তারা টানের জোর এড়াবার জন্যে দূরবর্তীদের চেয়ে দৌড়ায় বেশি জোরে। সৌরমণ্ডলে যেসব গ্রহ সূর্যের যত কাছে তাদের দৌড়ের বেগ ততই বেশি। দূরের গ্রহদের বিপদ কম, তারা অনেকটা ধীরে সুস্থে চলে।

 এই ইলেকট্রন প্রোটনের ব্যাস সমস্ত পরমাণুর পঞ্চাশ হাজার ভাগের একভাগ। অর্থাৎ পরমাণুর মধ্যে শূন্যতাই বেশি। একটা মানুষের দেহের সমস্ত পরমাণু যদি ঠেসে দেওয়া হয়, তাহলে তার থেকে একটি অদৃশ্যপ্রায় বস্তুবিন্দু তৈরি হবে।