পাতা:বিষবৃক্ষ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পঞ্চত্রিংশত্তম পরিচ্ছেদ ঃ অাশাপথে 》e “মরণে আনন্দ নাই” এই কথা বলিতে সূৰ্য্যমুখীর কণ্ঠ রুদ্ধ হইল । চক্ষু দিয়া জল श्रृंग्लिल । sk ব্রহ্মচারী কহিলেন, “যত বার মরিবার কথা হইল, তত বার তোমার চক্ষে জল পড়িল, দেখিলাম। অথচ তুমি মরিতে চাহ। মা, আমি তোমার সস্তান সদৃশ । আমাকে পুত্র বিবেচনা করিয়া মনের বাসনা ব্যক্ত করিয়া বল। যদি তোমার স্থঃখনিবারণের কোন উপায় থাকে, আমি তাহা করিব। এই কথা বলিব বলিয়াই, হরমণিকে বিদায় দিয়া, নির্জনে তোমার কাছে আসিয়া বসিয়াছি। কথাবাৰ্ত্তায় বুঝিতেছি, তুমি বিশেষ ভদ্রঘরের কন্যা হইবে। তোমার যে উৎকট মনঃপীড়া আছে, তাহাও বুঝিতেছি। কেন তাহা আমার সাক্ষাতে বলিবে না ? অামাকে সন্তান মনে করিয়া বল।” সূৰ্য্যমুখী সজললোচনে কহিলেন, “এখন মরিতে বসিয়াছি—লজ্জাই বা এ সময়ে কেন করি ? আর আমার মনোহুঃখ কিছুই নয়—কেবল মরিবার সময় যে স্বামীর মুখ দেখিতে পাইলাম না, এই দুঃখ । মরণেই আমার সুখ–কিন্তু যদি তাহাকে না দেখিয়া মরিলাম, তবে মরণেও দুঃখ । যদি এ সময়ে একবার তাহাকে দেখিতে পাই, তবে মরণেই আমার সুখ ।” ব্রহ্মচারীও চক্ষু মুছিলেন। বলিলেন, “তোমার স্বামী কোথায় ? এখন তোমাকে র্তাহার কাছে লইয়া যাইবার উপায় নাই। কিন্তু তিনি যদি, সংবাদ দিলে, এখানে আসিতে পারেন, তবে আমি তাহাকে পত্রের দ্বারা সংবাদ দিই।” সূৰ্য্যমুখীর রোগক্লিষ্ট মুখে হৰ্ষবিকাশ হইল। তখন আবার ভগ্নোৎসাহ হইয়৷ কহিলেন, “তিনি আসিলে আসিতে পারেন, কিন্তু আসিবেন কি না, জানি না । আমি র্তাহার কাছে গুরুতর অপরাধে অপরাধী—তবে তিনি আমার পক্ষে দয়াময়—ক্ষমা করিলেও করিতে পারেন। কিন্তু তিনি অনেক দূরে আছেন—আমি তত দিন বাচিব কি ?” ত্র । কত দূরে সে ? স্থ । হরিপুর জেলা। ত্র । বাচিবে । g এই বলিয়া ব্রহ্মচারী কাগজ কলম লইয়া আসিলেন, এবং সূৰ্য্যমুখীর কথামত নিম্নলিখিত মত পত্র লিখিলেন – “আমি মহাশয়ের নিকট পরিচিত নহি । আমি ব্রাহ্মণ—ব্রহ্মচৰ্য্যাশ্রমে আছি । আপনি কে তাহাও আমি জানি না। কেবল এইমাত্র জানি যে, শ্ৰীমতী সূৰ্য্যমুখী দাসী