পাতা:বিষবৃক্ষ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আপনার ভাৰ্য্যা । তিনি এই মধুপুর গ্রামে সঙ্কটাপন্ন রোগগ্ৰস্ত হইয়া হরমণি বৈষ্ণবীর বাড়ীতে আছেন। তাহার চিকিৎসা হইতেছে—কিন্তু বাচিবার আকার মহে । এই সংবাদ দিবার জন্য আপনাকে এ পত্র লিখিলাম। র্তাহার মানস, মৃত্যুকালে একবার আপনাকে দর্শন করিয়া প্রাণত্যাগ করেন। যদি তাহার অপরাধ ক্ষমা করিতে পারেন, ভৰে একবার এই স্থানে আসিবেন। আমি ইহাকে মাতৃসম্বোধন করি । পুত্রস্বরূপ ভাঙ্গর অনুমতিক্রমে এই পত্র লিখিলাম। র্তাহার নিজের লিখিবার শক্তি নাই । “যদি আসা মত হয়, তবে রাণীগঞ্জের পথে আসিবেন । রাণীগঞ্জে অনুসন্ধান করিয়৷ শ্ৰীমান মাধবচন্দ্র গোস্বামীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করিবেন। তাহাকে আমার নাম করিয়া বলিলে তিনি সঙ্গে লোক দিবেন। তাহা হইলে মধুপুর খুজিয়া বেড়াইতে হইবে না । “আসিতে হয় ত, শীঘ্ৰ আসিবেন, আসিতে বিলম্ব হইলে অভীষ্টসিদ্ধি হইবে না । ইতি স্ত্রীশিবপ্রসাদ শৰ্ম্ম।।” পত্র লিখিয়া ব্রহ্মচারী জিজ্ঞাসা করিলেন, “কাহার নামে শিরোনামা দিব ?" সূৰ্য্যমুখী বলিলেন, “হরমণি আসিলে বলিব ।” হরমণি আসিলে নগেন্দ্রনাথ দত্তের নামে শিরোনাম দিয়া ব্রহ্মচারী পত্রখানি নিকটস্থ ডাকঘরে দিতে গেলেন । ব্রহ্মচারী যখন পত্র হাণ্ডে লইয়া ডাকে দিতে গেলেন, তখন সূৰ্য্যমুখী সজলনয়নে, যুক্তকরে, উদ্ধমুখে, জগদীশ্বরের নিকট কায়মনোবাক্যে ভিক্ষা করিলেন, “হে পরমেশ্বর ! যদি তুমি সত্য হও, আমার যদি পতিভক্তি থাকে, তবে যেন এই পত্ৰখানি সফল হয়। আমি চিরকাল স্বামীর চরণ ভিন্ন কিছুই জানি ন—ইহাতে যদি পুণ্য থাকে, তবে সে পুণ্যের ফলে আমি স্বৰ্গ চাহি না । কেবল এই চাই, যেন মৃত্যুকালে স্বামীর মুখ দেখিয়া মরি ” y - কিন্তু পত্র ত নগেন্দ্রের নিকট পৌছিল না। পত্র যখন গোবিন্দপুরে পৌছিল, তাহার অনেক পূর্বে নগেন্দ্র দেশপর্যটনে যাত্রা করিয়াছিলেন। হরকরা পত্র বাড়ীর দরওয়ানের কাছে দিয়া গেল । 象 দেওয়ানের প্রতি নগেন্দ্রের আদেশ ছিল যে, আমি যখন যেখানে পৌছিব, তখন সেইখান হইতে পত্র লিখিব । আমার আজ্ঞা পাইলে সেইখানে আমার নামের পত্রগুলি পাঠাইয়া দিবে। ইতিপূর্বেই নগেন্দ্র পাটনা হইতে পত্র লিখিয়াছিলেন যে, “আমি নৌকাপথে কাশীযাত্রা করিলাম। কাশী পৌছিলে পত্র লিখিব। আমার পত্র পাইলে, সেখানে