পাতা:বিষবৃক্ষ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সপ্তম পরিচ্ছেদ : পদ্মপলাশলোচনে ! তুমি কে ? »ፃ বাজারে রাষ্ট ছিল। এই সকল গুণে তিনি দেবীপুরনিবাসী জমীদার দেবেন্দ্র বাবুর ব্রাহ্মসমাজভুক্ত হইলেন, এবং বাবুর পারিষদমধ্যে গণ্য হইলেন। সমাজে তারাচরণ বিধবাবিবাহ, স্ত্রীশিক্ষা এবং পৌত্তলিকবিদ্বেষাদি সম্বন্ধে অনেক প্রবন্ধ লিখিয়া, প্রতি সপ্তাহে পাঠ করিতেন, এবং “হে পরমকারুণিক পরমেশ্বর ” এই বলিয়া আরম্ভ করিয়া দীর্ঘ দীর্ঘ _ை করিতেন। তাহার কোনটা বা তত্ত্ববোধিনী হইতে নকল করিয়া লইতেন, কোনট বা স্কুলের পণ্ডিতের দ্বারা লেখাইয়া লইতেন। মুখে সৰ্ব্বদা বলিতেন, “তোমরা ইট পাটখেলের পূজা ছাড়, খুড়ী জ্যেঠাইয়ের বিবাহ দাও, মেয়েদের লেখাপড়া শিখাও, তাহাদের পিজরায় পূরিয়া রাখ কেন ? মেয়েদের বাহির কর ।” স্ত্রীলোক সম্বন্ধে এতটা লিবরালিটির একটা বিশেষ কারণ ছিল, তাহার নিজের গৃহ স্ত্রীলোকশূন্ত । এ পর্য্যন্ত র্তাহার বিবাহ হয় নাই ; সূর্য্যমুখী তাহার বিবাহের জন্য অনেক যত্ন করিয়াছিলেন, কিন্তু র্তাহার মাতার কুলত্যাগের কথা গোবিন্দপুরে প্রচার হওয়ায় কোন ভদ্র কায়স্থ তাহাকে কন্যা দিতে সম্মত হয় নাই। অনেক ইতর কায়স্থের কালো কুৎসিত কন্যা পাওয়া গেল। কিন্তু সূৰ্য্যমুখী তারাচরণকে ভ্রাতৃবৎ ভাবিতেন, কি প্রকারে ইতর লোকের কন্যাকে ভাইজ বলিবেন, এই ভাবিয় তাহাতে সম্মত হন নাই। কোন ভদ্র কায়স্থের স্বরূপ কন্যার সন্ধানে ছিলেন, ' এমত কালে নগেন্দ্রের পত্রে কুন্দনন্দিনীর রূপগুণের কথা জানিয়া তাহারই সঙ্গে তারাচরণের বিবাহ দিবেন, স্থির করিলেন। সপ্তম পরিচ্ছেদ পদ্মপলাশলোচনে ! তুমি কে ? কুন্দ, নগেন্দ্র দত্তের সঙ্গে গোবিন্দপুরে আসিল । কুন্দ, নগেন্দ্রের বাড়ী দেখিয়া অবাক হইল। এত বড় বাড়ী সে কখনও দেখে নাই । তাহার বাহিরে তিন মহল ভিতরে তিন মহল। এক একটি মহল, এক একটি বৃহৎ পুরী। প্রথমে, যে সদর মহল, তাহাতে এক লোহার ফটক দিয়া প্রবেশ করিতে হয়, তাহার চতুষ্পার্শ্বে বিচিত্র উচ্চ লোহার রেইল। ফটক দিয়া তৃণশূন্ত, প্রশস্ত, রক্তবর্ণ, স্বনিৰ্ম্মিত পথে যাইতে হয়। পথের দুই পার্থে, গোগণের মনোরঞ্জন, কোমল নবতৃণবিশিষ্ট হুই খণ্ড ভূমি। তাহাতে মধ্যে মধ্যে মণ্ডলাকারে রোপিত, সকুসুম পুষ্পবৃক্ষ সকল বিচিত্র পুষ্পপল্লবে শোভা পাইতেছে। সম্মুখে বড় উচ্চ \ථා