পাতা:বিষবৃক্ষ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একাদশ পরিচ্ছেদ " স্বৰ্য্যমুখীর পত্র “প্রাণাধিক শ্ৰীমতী কমলমণি দাসী চিরায়ুষ্মতীযু। আর তোমাকে আশীৰ্ব্বাদ পাঠ লিখিতে লজ্জা করে। এখন তুমিও একজন হইয়৷ উঠিয়াছ—এক ঘরের গৃহিণী। তা যাহাই হউক, আমি তোমাকে আমার কনিষ্ঠ ভগিনী ভন্ন আর কিছুই বলিয়া ভাবিতে পারিতেছি না। তোমাকে মানুষ করিয়াছি। প্রথম ক খ” লিখাই, কিন্তু তোমার হাতের অক্ষর দেখিয়া, আমার এ হিজিবিজি তোমার কাছে পাঠাইতে লজ্জ করে। তা লজ্জা করিয়া কি করিব ? অামাদিগের দিনকাল গিয়াছে । দনকাল থাকিলে আমার এমন দশা হইবে কেন ? কি দশ ? এ কথা কাহাকে বলিবার নহে,—বলিতে দুঃখও হয়, লজ্জাও করে। কন্তু অন্তঃকরণের ভিতর যে কষ্ট, তাহা কাহাকে না বলিলেও সহ্য হয় না। আর কাহাকে লিব ? তুমি আমার প্রাণের ভগিনী—তুমি ভিন্ন আর আমাকে কেহ ভালবাসে না । আর তোমার ভাইয়ের কথা তোমা ভিন্ন পরের কাছেও বলিতে পারি না । আমি আপনার চিত। আপনি সাজাইয়াছি। কুন্দনন্দিনী যদি না খাইয়৷ মরিত, চাহাতে আমার কি ক্ষতি ছিল ? পরমেশ্বর এত লোকের উপায় করিতেছেন, তাহার কি উপায় করিতেন না ? আমি কেন আপন খাইয় তাহাকে ঘরে আনিলাম ? তুমি সে হতভাগিনীকে যখন দেখিয়াছিলে, তখন সে বালিকা। এখন তাহার বয়স ,৭১৮ বৎসর হইয়াছে। সে যে মুন্দরী, তাহা স্বীকার করিতেছি। সেই সৌন্দর্য্যই মামার কাল হইয়াছে। পৃথিবীতে যদি আমার কোন মুখ থাকে, তবে সে স্বামী ; পৃথিবীতে যদি আমার কান চিন্তু থাকে, তবে সে স্বামী ; পৃথিবীতে যদি আমার কোন কিছু সম্পত্তি থাকে, তৰে স স্বামী ; সেই স্বামী, কুন্দনন্দিনী আমার হৃদয় হইতে কাড়িয়া লইতেছে। পৃথিবীতে আমার যদি কোন অভিলাষ থাকে, তবে সে স্বামীর স্নেহ । সেই স্বামীর স্নেহে কুন্দনন্দিনী মামাকে বঞ্চিত করিতেছে। তোমার সহোদরকে মন্দ বলিও না। আমি তাহার নিনা করিতেছি না। তিনি শ্বাত্মা, শক্রতেও তাহার চরিত্রের কলঙ্ক এখনও করিতে পারে না। আমি প্রত্যহ দেখিতে 创