পাতা:বিষবৃক্ষ-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্ৰয়োদশ পরিচ্ছেদ : মহাসমর 8> কিল দেখিয়া, শ্ৰীশচন্দ্র কমলমণির খোপ খুলিয়া দিলেন। এখন বৰ্দ্ধিতরোষা কমলমণি, শ্ৰীশচন্দ্রের দোয়াতের কালি পিকদানিতে ঢালিয়া ফেলিয়া দিল। . রাগে শ্ৰীশচন্দ্র দ্রুতগতি ধাবমান হইয়া কমলমণির মুখচুম্বন করিলেন। রাগে কমলমণিও অধীর হইয়৷ শ্ৰীশচন্দ্রের মুখচুম্বন করিল। দেখিয়া সতীশচন্দ্রের বড় প্রীতি জন্মিল । তিনি জানিতেন যে, মুখচুম্বন তাহার ইজারা মহল। অতএব তাহার ছড়াছড়ি দেখিয়া রাজভাগ আদায়ের অভিলাষে মার জামু ধরিয়া দাড়াইয়া উঠিলেন ; এবং উভয়েরই মুখপানে চাহিয়া উচ্চৈঃস্বরে হাসির লহর তুলিলেন। সে হাসি কমলমণির কর্ণে কি মধুর বাজিল ! কমলমণি তখন সতীশকে ক্রোড়ে উঠাইয়া লইয়া ভুরি ভুরি মুখচুম্বন করিল। পরে শ্রীশচন্দ্র কমলের ক্রোড় হইতে তাহাকে লইলেন এবং ভুরি ভুরি মুখচুম্বন করিলেন। সতীশ বাবু এইরূপে রাজভাগ আদায় করিয়া যথাকালে অবতরণ করিলেন, এবং পিতার সুবর্ণময় পেনসিলটি দেখিতে পাইয়া অপহরণমানসে ধাবমান হইলেন। পরে হস্তগত করিয়া উপাদেয় ভোজ্য বিবেচনায় পেনসিলটি মুখে দিয়া লেহন করিতে প্রবৃত্ত হইলেন । কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধকালে ভগদত্ত এবং অর্জুনে ঘোরতর যুদ্ধ হয়। ভগদত্ত অর্জুন প্রতি অনিবাৰ্য্য বৈষ্ণবাস্ত্র নিক্ষেপ করেন ; অর্জুনকে তন্নিবারণে অক্ষম জানিয়া শ্ৰীকৃষ্ণ স্বয়ং বক্ষঃ পাতিয়া সেই অস্ত্র গ্রহণ করিয়া তাহার শমত করেন। সেইরূপ, কমলমণি ও শ্রীশচন্দ্রের এই বিষম যুদ্ধে, সতীশচন্দ্র মহাস্ত্র সকল আপন বদনমণ্ডলে গ্রহণ করায় যুদ্ধের শমত হইল। কিন্তু ইহাদের এইরূপ সন্ধিবিগ্রহ বাদলের বৃষ্টির মত—দণ্ডে দণ্ডে হইত, দণ্ডে দণ্ডে যাইত । শ্ৰীশচন্দ্র তখন কহিলেন, “তা সত্য সত্যই কি তোমার গোবিন্দপুরে যেতে হবে ? আমি এক থাকিব কি প্রকারে ?” ক। তোমায় যেন আমি এক থাকিতে সাধতেছি। আমিও যাব, তুমিও যাবে। ত। যাও, সকাল সকাল আপিস সারিয়া আইস, আর দেরি কর ত, সতীশে আমাতে ছ-দিকে ছুইজনে র্কাদতে বসবো । স্ত্রী। আমি যাই কি প্রকারে ? আমাদের এই তিসি কিনিবার সময়। তুমি তবে এক যাও । 畿 ক । আয়, সতীশ । আয়, আমরা ছু-জনে দুই দিকে র্কাদতে বসি । মার আদরের ডাক সতীশের কাণে গেল—সতীশ অমনি পেনসিলভোজন ত্যাগ করিয়া লহর তুলিয়া আহলাদের হাসি হাসিল, সুতরাং কমলের এবার কাদা হলো না। స్క్రి sیمیاء