পাতা:বিষম বুদ্ধি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
দারোগার দপ্তর, ১৪০ সংখ্যা।

করিয়াছিল, তাহারা কেহই সেইস্থানে নাই। রাত্রিকালে যতদূর সম্ভব, ঐ মৃতদেহটী আমি একবার দেখিলাম, উহা দেখিয়া উহার মৃত্যুর কারণ আমি কিছুই অনুমান করিতে সমর্থ হইলাম না।

 সেই ঘাটের কর্ম্মচারীকে তখন ডাকিলাম, ইনি একজন বহু পুরাতন কর্ম্মচারী। বয়ঃক্রম পঞ্চাশ বৎসর অতীত হইয়া গিয়াছে, এবং এই কার্য্যে তিনি প্রায় ত্রিশ বৎসর অতিবাহিত করিয়াছেন। এই দীর্ঘকালের মধ্যে তিনি যে কত মৃতদেহ দর্শন করিয়া ঐ সকল মৃতদেহের দাহকার্য সম্পন্ন করিতে অনুমতি প্রদান করিয়াছেন, তাহা নির্ণয় করা সহজ নহে। এই বহুদর্শিতার ফলেই এই মৃতদেহ দাহ করিতে তিনি অনুমতি প্রদান করেন নাই। তিনি আমার নিকট আসিয়া উপস্থিত হইলে আমি তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম, কি কারণে আপনি সন্দেহ করিলেন যে, এই ব্যক্তি স্বাভাবিক মৃত্যুতে মরে নাই?

 কর্ম্মচারী। কারণ কিছুই বলিতে পারি না। যাহারা ঐ মৃতদেহ এখানে আনয়ন করিয়াছিল, তাহারা আমাকে বলিয়াছিল যে, বিসূচিকারোগে উহার মৃত্যু হইয়াছে। আমি সহস্র সহস্র বিসূচি্রোকাগে মৃত ব্যক্তিকে দেখিয়াছি, কিন্তু এই মৃতদেহে বিসূচিকারোগের কোন চিহ্নই নাই। সুতরাং ইহার মৃত্যুসম্বন্ধে আমার সন্দেহ হয়, এবং সেই সন্দেহের উপর নির্ভর করিয়াই আমি পুলিসে সংবাদ প্রদান করিয়াছি।

 আমি। ইহার কিসে মৃত্যু হইয়াছে বলিয়া আপনার অনুমান হয়?

 কর্ম্ম। আমি কিছুই স্থির করিয়া উঠিতে পারি নাই। কোন রোগে ইহার মৃত্যু হইয়াছে বলিয়া আমার অনুমান হয় না।