পাতা:বিষম বুদ্ধি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিষম বুদ্ধি।
১৩

করিয়া দেখে যে, সে একটী স্ত্রীলোক। ইহা দেখিয়াই সে সেই স্থান হইতে প্রত্যাবর্ত্তন করে ও দেখিতে পায়, যাহাকে সে সেইস্থানে রাখিয়া গিয়াছিল, সেও সেইস্থানে নাই; অন্ধকারের আশ্রয় গ্রহণ করিয়া সে সেইস্থান হইতে প্রস্থান করিয়াছে। কিয়ৎক্ষণ তাহার অনুসন্ধান করিয়া দেখে, কিন্তু আর তাহাকে প্রাপ্ত হয় না। ইহার কিয়ৎক্ষণ পরেই পুলিস-প্রহরী আসিয়া সেইস্থানে উপস্থিত হয়।

 ডোমের নিকট এই অবস্থা অবগত হইয়া বেশ বুঝিতে পারিলাম যে, তাহারই বুদ্ধির দোষে ঐ ব্যক্তি প্রস্থান করিতে সমর্থ হইয়াছে। ঐরূপ শব-বাহকগণ প্রস্থান করায় (বর্ত্তমান ক্ষেত্রে না হউক) যে কতদূর অনিষ্ট হইবার সম্ভাবনা, পাঠকগণ তাহা অনায়াসেই অনুমান করিতে পারেন। এরূপ অবস্থায় শববহনকারী লোকগণকে প্রাপ্ত না হইলে ঐ মৃতদেহ কোথা হইতে যে অনীত হইয়াছে, তাহা স্থির করা নিতান্ত সহজ হয় না। তাহার উপর উহা যদি হত্যা মকর্দ্দমায় পরিণত হয়, তাহা হইলে ঐ মকর্দ্দমার অনুসন্ধান হওয়া একরূপ অসাধ্যই হইয়া উঠে। সে যাহা হউক, বর্ত্তমানক্ষেত্রে উহারা পলায়ন করিলেও সেইরূপ ভয়ের বিশেষরূপ কোন কারণ ছিল না। কারণ ইহা যদি হত্যা মকর্দ্দমায় পরিণত হয়, তাহা হইলে হত্যাকারীর অনুসন্ধান করিতে হইবে না। সে পূর্ব্ব হইতেই আপনি থানায় আসিয়া আত্মসমর্পণ করিয়াছে এবং যে ব্যক্তি হত হইয়াছে, তাহার নাম ও বাসস্থান সে আমাদিগকে বলিয়া দিয়াছে। এরূপ অবস্থায় শববহনকারীগণ পলায়ন করায় আমাদিগের কার্য্যের বিশেষ কোনরূপ অসুবিধা ঘটে নাই।