পাতা:বিষম বুদ্ধি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
দারােগার দপ্তর, ১৪০ সংখ্যা।

সংগ্রহ করিয়া রাখিয়াছিলেন। রসিক শয়ন করিলে, রাজচন্দ্রের স্ত্রী লুক্কাইতভাবে সেই পেরেকটী নিজের নিকট রাখিয়া তাহার পার্শ্বে আসিয়া উপবেশন করিলেন, ও তাহার গাত্রে হস্তার্পণ করিতে করিতে সেই পেরেকটী তাহার বক্ষঃস্থলে এরূপ সজোরে বসাইয়া দিলেন যে, সেই পেরেকের প্রায় অর্ধেক রসিকের হৃৎপিণ্ডে বিদ্ধ হইয়া গেল। রসিক চীৎকার করিয়া উঠিল, কিন্তু ঘরের সমস্ত দরজা বন্ধ থাকায় সেই শব্দ বিশেষরূপে বাহিরে যাইতে পারিল না। সেই স্থানে বিছানার পার্শ্বেই একখণ্ড কাষ্ঠ রাজচন্দ্রের স্ত্রী পূর্ব্ব হইতেই রাখিয়া দিয়াছিলেন, চকিতের ন্যায় তিনি ঐ কাষ্ঠখণ্ড গ্রহণ করিয়া সেই পেরেকের উপর সজোরে আঘাত করিয়া সেই পেরেকটী সম্পূর্ণরূপে উহার হৃৎপিণ্ডের মধ্যে বিদ্ধ করিয়া দিলেন। দেখিতে দেখিতে রসিক ইহজীবন পরিত্যাগ করিল; রসিক মৃত অবস্থায় সেইস্থানে পড়িয়া রহিল। রাজচন্দ্র দাসের স্ত্রী ঐ ঘরে তালা বন্ধ করিয়া দিয়া অপর এক ঘরে গিয়া চুপ করিয়া বসিয়া রহিলেন। বসিয়া রহিলেন সত্য, কিন্তু তাঁহার মনের গতিক সেই সময় যে কি হইয়াছিল, তাহা পাঠকগণ অনায়াসেই অনুভব করিতে পারিবেন। তিনি একে স্ত্রীলোক, গৃহস্থঘরের বউ, তাহাতে তিনি চরিত্রবতী বলিয়া পাড়ার সকলের নিকট পরিচিত, এরূপ অবস্থায় তাঁহার ঘরের মধ্যে অপরিচিত পুরুষের সমভিব্যাহারে কিয়ৎক্ষণ অবস্থিতি করিবার পর, তাহাকে হত্যা করা ও ঐ মৃতদেহ আপন পালঙ্কের উপর রাখিয়া ঘরে তালা বদ্ধ করিয়া একাকী সেই বাড়ীতে স্থির ভাবে বসিয়া থাকা, স্ত্রীলোকের পক্ষে যে কতদূর দুরূহ ব্যাপার তাহা পাঠকগণ অনায়াসেই অনুভব করিতে পারিবেন। কিন্তু রাজচন্দ্র দাসের