পাতা:বিষম বুদ্ধি - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিষম বুদ্ধি।
৪৭

স্ত্রীর হৃদয় কিরূপ তাহা জানি না, তিনি এইরূপ অবস্থায় ঐ মৃতদেহ ঘরের ভিতর রাখিয়া স্থিরভাবে নিকটবর্ত্তী আর একটী ঘরে উপবেশন করিয়া আপনার স্বামীর আগমনের প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন। ইহার অতি অল্পক্ষণ পরেই তাঁহার স্বামী অফিস হইতে প্রত্যাগমন করিলে, তিনি সমস্ত কথা তাঁহার নিকট বলিলেন ও ঘরের তালা খুলিয়া রসিকের মৃতদেহ দেখাইলেন। রাজচন্দ্র দাস চতুর্দ্দিক অন্ধকার দেখিলেন। এরূপ অবস্থায় কি করা কর্ত্তব্য তাহা স্থির করিতে না পারিয়া ঘরের দরজা পূর্ব্ববৎ বন্ধ করিয়া দিয়া তাঁহার অফিসের একজন বিশ্বাসী বন্ধুর নিকট গমন করিলেন, ও তাঁহাকে সমস্ত কথা বলিলেন। সমস্ত কথা শুনিয়া, বন্ধুবর রাজচন্দ্র দাসের স্ত্রীকে ধন্যবাদ প্রদান করিলেন, ও কহিলেন, যাহা হইয়াছে তাহার নিমিত্ত বিশেষরূপ ভাবিবার কোন কারণ নাই। এই বলিয়া তিনি তাঁহার নিজের গাড়ী প্রস্তুত করিতে আদেশ প্রদান করিলেন, ও তাঁহার নিজের দুইজন বিশ্বাসী কর্ম্মচারীকে সঙ্গে লইয়া ঐ গাড়ীতে রাজচন্দ্র দাসের সহিত তাঁহার বাড়ীতে গিয়া উপস্থিত হইলেন। তিনি, রাজচন্দ্র দাস ও ঐ দুইজন কর্ম্মচারী রসিকের মৃতদেহ ঘর হইতে বাহির করিয়া তাঁহার নিজের গাড়ীর মধ্যে এরূপ সতর্কতার সহিত রাখিয়া দিলেন যে, অপর কোন ব্যক্তি ইহার কিছুমাত্র জানিতে পারিল না। এইরূপে মৃতদেহ সেইস্থান হইতে লইয়া প্রস্থান করিলেন ও শবদাহ করিবার ঘাটের সন্নিকটবর্ত্তী কোন স্থানে অন্ধকারের মধ্যে ঐ গাড়ী রাখিয়া একখানি খাট আনাইয়া তাহাতে ঐ মৃতদেহ স্থাপন পূর্ব্বক আপনারা বহন করিয়া শবদাহ করিবার ঘাটে লইয়া গেলেন, ও বিসূচিকা যোগে উহার মৃত্যু হইয়াছে