সম্ভাবনা রহিল না। অবশিষ্ট অচিহ্নিত খেজুরগুলিতে সেই কৌটার সাঙ্ঘাতিক বিষ মিশ্রিত করিয়া, উভয় খেজুর একত্র করিয়া রাখিয়া দিলেন।
হাসান জয়নাবকে বলিয়াছিলেন, “গত রাত্রে জাএদার গৃহে বাস করিব ইচ্ছা ছিল, দৈববশে এমনি ঘটনা ঘটিল যে, সমস্ত রাত্রি পেটের বেদনায় শরীরের জ্বালায় অস্থির ছিলাম। মুহূর্ত্তকালের জন্যও সুস্থির হইতে পারি নাই। ভাবনায় চিন্তায় জাএদাও কোন কথা মুখে আনিতে পারে নাই। কেবলমাত্র বলিয়াছিল সকলই আমার কপাল। তা যাহাই হউক, আজও জাএদার গৃহে যাইতেছি।”
জয়নাব বিশেষ সন্তুষ্ট হইয়া হাসানকে বিদায় দান করিলেন। জয়নাবের ইচ্ছা যে,—কাহারও মনে যেন দুঃখ না হয়, স্বামীধনে কেহই যেন বঞ্চিত না হয়। সে ধনের সকলেই অধিকারিণী ও প্রত্যাশিনী।
হাসানেরও শরীর সম্যক্ সুস্থ হয় নাই; বিষের তেজ শরীর হইতে একেবারে যে নির্দ্দোষভাবে অপসৃত হইয়াছে—তাহাও নহে। শরীরের গ্লানি ও দুর্ব্বলতা এবং উদরের জড়তা এখনও অনেক আছে। এ সকল থাকা সত্ত্বেও তিনি জাএদার গৃহে উপস্থিত হইয়া গত রাত্রির ঘটনা আলোচনা করিতে লাগিলেন। সেই মধুর কথাও জিজ্ঞাসা করিলেন। জাএদা উত্তর করিলেন, “যে মধুতে এত যন্ত্রণা, এত ক্লেশ, সেই মধু আমি আবার গৃহে রাখিব? পাত্রসমেত তাহা আমি তৎক্ষণাৎ দূর করিয়া ফেলিয়া দিয়াছি।”
জাদার ব্যবহারে হাসান যার-পর-নাই সন্তুষ্ট হইলেন। সুযোগ পাইয়া জাএদা সেই খর্জ্জুরের পাত্র এমাম হাসানের সম্মুখে রাখিয়া নিকটে বসিয়া তাঁহাকে খর্জ্জুর ভক্ষণে অনুরোধ করিলেন। হাসান স্বভাবতঃই খর্জ্জুর ভালবাসিতেন; কিন্তু গত রজনীতে মধু পান করিয়া যে কষ্ট পাইয়াছিলেন, তাহা মনে করিয়া একটু ইতস্ততঃ করিতে লাগিলেন। চতুরা জাএদা স্বামীর অগ্রেই চিহ্নিত খেজুরগুলি খাইতে আরম্ভ করিয়া দিলেন। দেখাদেখি এমাম হাসানও চিহ্নিত এবং অচিহ্নিত উভয়বিধ খেজুর একটি একটি করিয়া খাইতে আরম্ভ করিলেন। উর্দ্ধসংখ্যা সাতটি উদরস্থ হইলেই