অশ্ব ছুটিল। হোসেনের অশ্ব বিকট চীৎকার করিতে করিতে সীমারের পশ্চাৎ পশ্চাৎ ছুটিল। আবদুল্লাহ্ জেয়াদ, অলীদ প্রভৃতি অশ্ব লক্ষ করিয়া অবিশ্রান্ত শরনিক্ষেপ কহিতে লাগিল। সুতীক্ষ্ণ তীর অশ্ব-শরীর ভেদ করিয়া পার হইল না, কিন্তু শোণিতের ধারা ছুটিল। পশু-হৃদয়ে বেদনা নাই? কে বলে মানুষের জন্য পশুর প্রাণ কাদিয়া আকুল হয় না?—মানুষের ন্যায় পশুর প্রাণ ফাটিয়া যায় না?—বাহির হয় না। অশ্ব ফিরিল। কিছু দূর যাইয়া শরসংযুক্ত শরীরে হোসেনের দুল্দুল্[১] সীমারের পশ্চাদ্গমন হইতে ফিরিল।
তীর নিক্ষিপ্ত হইতেছে! এখন অশ্বের বক্ষে, গ্রীবাদেশে তীক্ষ্ণতর তীর ক্রমাগত বিধিতেছে; কিন্তু অশ্বের গতি মুহূর্তের জন্য থামিতেছে না! দুল্দুল্ মহাবেগে প্রভু হোসেনের শিরশূন্য-দেহ সন্নিধানে আসিয়া তাহার পদ হইতে স্কন্ধ, স্কন্ধ হইতে পদ পর্যন্ত নাসিকা দ্বারা ঘ্রাণ লইয়া আবার তাঁহার মস্তক লক্ষ্য করিয়া ছুটিবায় উদ্যোগ করিতেই বিপক্ষগণ নানা কৌশলে তাহাকে ধরিবার চেষ্টা করিতে লাগিল। অর্শ্বশ্রেষ্ঠ দুল্দুল্ সকলই দেখিতেছে, বোধ হয়, অনেক কিছুই বুঝিতে পারিতেছে; ধরা পড়িলে তাহার পরিণাম-দশা যে কি হইবে, তাও বোধ হয় ভাবিতেছে। প্রভু হোসেন যে পৃষ্ঠে আরোহণ করিতেন, সেই পৃষ্ঠে প্রভু হন্তা কাফেরগণকে লইয়া আজীবন পাপের
- ↑ হোসেনের অশ্বের নাম