যাইবে। অধম সন্তান এই দণ্ডায়মান হইল, খড়গ হস্তে করুন। আমরা বাঁচিয়া থাকিতে মহাপুরুষ হোসেনের শির দামেস্ক-রাজ্যের ক্রীড়ার জন্য লইয়া যাইতে দিব না।”
আজর পুনরায় খড়গ হস্তে লইলেন। যাহা হইবার হইয়া গেল। শির লইয়া তিনি সীমারের নিকটে আসিলেন। সীমার আরও আশ্চর্য্যান্বিত হইয়া মনে মনে বলিল, “এ উন্মাদ কি করিতেছ?” প্রকাশ্যে সে বলিল, “ওহে পাগল! তোমার এ পাগলামী কেন? আমি হোসেনের শির চাহিতেছি।”
“এ কি কথা? ভ্রাতঃ! তোমার একটি কথাতেও বিশ্বাসের লেশ নাই। ধিক্ তোমাকে!”
পুনরায় সীমার বলিল, “দেখ ভাই, হোসেনের শির রাখিয়া কি করিবে? এই মস্তকটির পরিবর্ত্তে দুইটি প্রাণ অনর্থক বিনাশ করিলে, বল ত ইহারা তোমার কে?”
“এই দুইটি আমার সন্তান!”
“তবে ত তুমি বড় ধূর্ত ডাকাত! টাকার লোভে আপনার সন্তান স্বহস্তে বিনাশ করিয়াছ! ছিঃ! ছিঃ! তোমার ন্যায় অর্থ-পিশাচ জগতে আর কে আছে? তুমি তোমার পুত্রের মস্তক রাখিয়া দাও, শীঘ্র হোসেনের মস্তক আনিয়া দাও, নতুবা তোমার নিস্তার নাই।”
“ভ্রাতঃ! আমার গৃহে একটি মস্তক ব্যতীত আর নাই, আনিয়া দিতেছি, লইয়া যাও।”
“আরে হাঁ হাঁ, সেইটিই ত চাহিতেছি; সেই একটি মস্তক আনিয়া দিলেই আমি এখনই চলিয়া যাই।”
আজর শীঘ্র শীঘ্র যাইয়া যাহা করিলেন, তাহা লেখনীতে লেখা অসাধ্য। পাঠক! বোধ হয়, বুঝিয়া থাকিবেন। এবারে সর্ব্বকনিষ্ঠ সন্তানের শির লইয়া আজর সীমারের নিকট উপস্থিত হইলেন।
সীমার ক্রোধে অধীর হইয়া বলিতে লাগিল, “আমি এতক্ষণ অনেক সহ্য করিয়াছি। পিশাচ! আমার সঞ্চিত শির লইয়া তুই পুরস্কার লইবি? তাহা কখনই পারিবি না।”