পুনরায় মোহাম্মদ হানিফা বলিলেন, “যাহা ঘটিবার ঘটিয়াছে, ভবিষ্যতের লেখা খণ্ডন করিতে কাহারও সাধ্য নাই। মদিনাভিমুখে গমনই যখন স্থির হইল, তখন বিশ্রামের কথা যেন কাহারও অন্তরে আর উদয় না হয়। সৈন্যগণসহ আমার পশ্চাদগামী হও।”
দিবারাত্রি গমন। বিশ্রামের কথা কাহারও মুখে নাই। এই প্রকারে কয়েক দিন অবিশ্রান্তভাবে গমন করিলে দ্বিতীয় কাসেদের সহিত মোহাম্মদ হানিফার দেখা হইল। দ্বিতীয় নিশান দেখিয়াই তিনি গমনে ক্ষান্ত দিলেন।
কাসেদ যথাবিধি অভিবাদন করিয়া জোড়করে বলিল,—“বাদশাহ্-নামদার! দাসের অপরাধ মার্জ্জনা হউক। আমি মদিনার কাসেদ।”
মোহাম্মদ হানিফা বিশেষ আগ্রহে জিজ্ঞাসা করিলেন, “সংবাদ কি?”
“পূর্ব্বসংবাদ বাদশাহ্-নামদারের অবিদিত নাই। তৎপরে সংবাদ পাওয়া গিয়াছে, আর আমি যাহা স্বচক্ষে দেখিয়া আসিয়াছি, তৎসমুদয়ই বলিতেছি।”
“বাদশাহ্-নামদার! আপনার ভ্রাতৃবংশে পুরুষ পক্ষে কেবলমাত্র এক জয়নাল আবেদীন জীবিত আছেন। তিনি, তাঁহার মাতা, ভগ্নী পিতৃব্য-পত্নী এখন দামেস্ক নগরে বন্দী। দিনান্তে এক টুকরা শুষ্করুটি, এক পাত্র জল ভিন্ন আর কোন প্রকার খাদ্যের মুখ দেখাও তাঁহাদের ভাগ্যে নাই। এজিদ এক্ষণে অগ্নিমুর্ত্তি ধারণ করিয়া বসিয়াছেন—সে কেবল আপনার সংবাদে। আপনার প্রাণ বিনাশ করাই এক্ষণে তাঁহার প্রথম কার্য্য। তিনি ওত্বে অলীদকে লক্ষাধিক সৈন্যসহ সাজাইয়া মদিনার সীমায় পাঠাইয়া দিয়াছেন। ওত্বে অলীদ মদিনা আক্রমণ না করিয়া আপনার প্রতীক্ষায় মদিনার প্রবেশপথ রোধ করিয়া সর্ব্বদা সতর্ক ও প্রস্তুত রহিয়াছে। অলীদ আপনার শিরশ্ছেদ করিয়া পরে মদিনার সিংহাসনে এজিদ-পক্ষ হইতে বসিবে,—ইহাই ঘোষণা করিয়াছে। এক্ষণে যাহা ভাল হর করুন।”
মোহাম্মদ হানিফা এবার এক নূতন চিন্তায় নিপতিত হইলেন। সহজে