সহিত যোগ দিলেন। মস্হাব কাক্কা হানিফার পদচুম্বন করিয়া বলিলেন— “বিলম্বের কারণ পরে সবলিব, এখন কি আজ্ঞা?”
মোহাম্মদ হানিফা বলিলেন, “ভাই! পরে শুনিব,—কথা পরে শুনিব, এখন ধর তরবারি—মার কাফের, তাড়াও অলীদ। মনের কথা কহিতে, দুঃখের কান্না কাঁদিতে, অনেক সময় পাইবে। সে সকল কথা মনেই গাঁথা আছে। এখন প্রথম কার্য্য,—মদিনায় প্রবেশ। তোমার তরবারি এদিকে চলিতে থাকুক, আমি অন্য দিকে চলিলাম।”
হানিফা অসি উঠাইলেন। মস্হাব কাক্কাও ঈশ্বরের নাম করিয়া শত্রুনিপাতে অসি নিষ্কোষিত করিলেন। উভয়ের সম্মিলনে এক অপূর্ব্ব নব ভাবের আবির্ভাব হইল। উভয় দলের বাজনা একত্রে বাজিতে লাগিল, উভয় দলের সৈন্য মিলিয়া এক হইয়া চলিল,—অলীদের মনেও নানারূপ চিন্তার লহরী খেলিতে লাগিল। মোহাম্মদ হানিফার বিরুদ্ধেই জয়ের আশা ছিল না, তাহার পর তত্তুল্য আর একটি বীর হঠাৎ উপস্থিত হইল—অস্ত্রও ধারণ করিল—“আর রক্ষা নাই। কিছুতেই আর রক্ষা নাই!!”
অলীদ মহা সঙ্কটে পড়িল, কি করিবে কিছুই স্থির করিতে পারিতেছে না। অনেকক্ষণ চিন্তার পর সে মনে মনে সাব্যস্ত করিল: ভাগ্যে যাহা থাকে হইবে, সহসা মস্হাব কাক্কার সম্মুখে যুদ্ধে যাইব না। দেখি, মস্হাব কাক্কা কি করে।
অলীদ গুপ্তস্থানে বসিয়া দেখিতে লাগিল যে, হানিফা দক্ষিণ পার্শ্বে যাইয়া মদিনার গমন-পথ পরিষ্কার করিতেছেন; মস হাব কাক্কা বাম পার্শ্বে (তাহারই দিকে) অস্ত্রচালনা করিয়া অগ্রসর হইতেছেন, আর বারবার ‘অলীদ’ নাম উচ্চারণ করিয়া তাহাকে যুদ্ধে আহ্বান করিতেছেন এবং বলিতেছেন, “অলীদ! শীঘ্র বাহির হও,—শিবির হইতে শীঘ্র বাহির হও। তোমার বীরত্ব দেখিতেই আজ ক্লান্ত, পথশ্রান্ত শরীরেই অস্ত্র ধরিয়াছি—আইস, আর বিলম্ব কি অলীদ? অলীদ! আইস, আজ তোমাকে দেখিব। ঈশ্বরের দোহাই, তোমাকে আজ ভাল করিয়া দেখিব। তোমার বল, বিক্রম, সাহস সবই দেখিব। যদি সময় পাই, তবে তোমার তরবারির তেজ, বর্শার