প্রাণ রক্ষা হইয়াছে। কিন্তু মস্হাব কাক্কা ছাড়িবার পাত্র নহেন, এমন সজোরে তিনি অলীদ মহামতিকে ফেলিয়া দিয়াছিলেন যে, অনেকক্ষণ পর্য্যন্ত অচেতন অবস্থায় পড়িয়া থাকিয়া শেষে তিনি উঠিতে উঠিতে, পড়িতে পড়িতে পলাইয়া প্রাণরক্ষা করিয়াছেন।”
“মস্হাব কাক্কা কে?”
“তিনিই ত মহারথী সীমারকে ধরিয়া লইয়া—”
“তাহা ত শুনিয়াছি, অলীদ বাঁচিয়া গিয়াও কিছু করিল না?”
“মহারাজ! তিনি পলায়িত, পরাজিত, আতঙ্কিত, নিদ্রাবশে কাক্কারূপে চকিত—চমকিত। তিনি কি আর তাঁহার সম্মুখে দাঁড়াইতে পারেন?”
“মারওয়ান বোধ হয় অলীদের সাহায্য করিতে পারে নাই?”
“তিনি আর কি সাহায্য করিবেন? বাদশাহ্-নামদার! মোহাম্মদ হানিফা আমাদের সর্ব্বস্বান্ত করিয়া মদিনায় প্রবেশ করিলেন। এদিকে মহামতি অলীদ দামেস্কাভিমুখে যাত্রা করিলেন—ওদিকে মন্ত্রী মহোদয়ও দামেস্ক হইতে মদিনাভিমুখে যাত্রা করিলেন। পথিমধ্যে উঁহাদের দেখা হইল। এইক্ষণে তাঁহারা সেই সংযোগস্থানে শিবির নির্ম্মাণ করিয়া বিশ্রাম করিতেছেন। আমি সেই সংযোেগ-স্থান হইতে মন্ত্রীপ্রবরের পত্র লইয়া আসিয়াছি। তাঁহারা গোপন অনুসন্ধানে জানিতে পারিয়াছেন যে, মোহাম্মদ হানিফা শীই দামেস্ক-নগর আক্রমণ করিবেন।”
এজিদ রোষে অধীর হইয়া বলিলেন, “তাহারা শুনিতে পারে, তাহারা হারিতে পারে, তাহারা হানিফার নামে কাঁপিতে পারে, তাহারা বিশ্রামও করিতে পারে। কিন্তু দামেস্ক নগরে মানুষের আক্রমণ করিবার কি সাধ্য আছে? এই নগরে শত্রু প্রবেশের কি ক্ষমতা আছে? এই দুর্ভেদ্য প্রাচীর, পঞ্চবিংশতি লৌহদ্বার, ষষ্টি সেতু, অশীতি পরিখা, পঞ্চ সহস্র গুপ্ত কূপ, এজিদ জীবিত,—ইহাতে হানিফা দূরের কথা; হানিফার পিতা আলী গোর হইতে উঠিয়া আসিলেও এ নগরে প্রবেশ করিতে পারিবেন না। যাও কাসেদ; এখনই যাও—মারওয়ানকে গিয়া বল যে; আমি স্বয়ং যুদ্ধে আসিতেছি। দেখি মদিনা আক্রমণ করিতে পারি কি না? দেখি মদিনার সিংহাসনে