সেনা পাঠাইলেন। এইবার এজিদ হানিফাকে তরবারিহস্তে তাঁহার সৈন্যগণের নিকট যাইতে দেখিলেন মাত্র। পরক্ষণে দেখিলেন যে, প্রেরিত সৈন্যগণের অশ্বসকল দিগ্বিদিক ছুটিয়া বেড়াইতেছে, একটি অশ্বপৃষ্ঠেও আরোহী নাই।
এজিদ যুদ্ধক্ষেত্রে স্বয়ং যাইতে প্রস্তুত হইলেন। মারওয়ান করজোড়ে বলিলেন,—“মহারাজ! এমন কার্য্য করিবেন না, আজ মোহাম্মদ হানিফার সম্মুখে কখনই যাইবেন না। এখনও দামেস্কের অসংখ্য সৈন্য রহিয়াছে, আমরা জীবিত থাকিতে মহারাজকে হানিফার সম্মুখীন হইতে দিব না।”
এজিদ মারওয়ানের কথায় ক্ষান্ত হইলেন; সেদিন আর যুদ্ধ করিলেন না। সে দিনের মত শেষ বাজনা বাজাইয়া নিশান উড়াইয়া মারওয়ানসহ তিনি শিবিরে ফিরিলেন। মোহাম্মদ হানিফাও তরবারি কোষে আবদ্ধ করিয়া অশ্ববল্গা ফিরাইয়া শিবিরে গমন করিলেন।
ত্রয়োবিংশ প্রবাহ
প্রভাত হইল। পাখীরা ঈশ-গান গাহিতে গাহিতে জগৎ জাগাইয়া তুলিল। অরুণোদয়ের সহিত যুদ্ধ-নিশান দামেস্ক-প্রান্তরে উড়িতে লাগিল। যে মস্তক জয়নাবের কর্ণাভরণের দোলায় দুলিয়াছিল, ঘুরিয়াছিল (এখনও দুলিতেছে, ঘুরিতেছে), আজ সেই মস্তক হানিফার অস্ত্রচালনার কথা মনে করিয়া মহাবিপাকে বিষম পাকে ঘুরিতে লাগিল। সঙ্গে সঙ্গে মারওয়ান, অলীদ, জেয়াদ ও ওমরের মস্তক পরিশুষ্ক—সৈন্যগণের হৃদয়ে ভয়ের সঞ্চার—না জানি আবার কি ঘটে।
উভয় পক্ষই প্রস্তুত। হানিফার বৈমাত্রেয় এবং কনিষ্ঠ ভ্রাতা ওমর আলী করজোড়ে হানিফার নিকট বলিলেন,—“আর্য্য! আজিকার যুদ্ধভার দাসের প্রতি অর্পিত হউক।”
হানিফা সস্নেহে বলিলেন,—“ভ্রাতঃ। গতকল্য যে উদ্দেশ্যে তরবারি