সৈন্যগণ সহস্রমুখে প্রতি মুহূর্ত্তে নব ভূপতির জয় যোষণা করিতেছে। আর কি শুনিতে চাহেন?”
এজিদ মহাব্যস্তে বলিলেন, “অলীদ। তুমি আমার চিরকালের অনুগত, অধিক আর কি বলিব, ঐ দিকে যখন গিয়াছ, তখন মন ফিরাও, হানিফার সৈন্য-শিরেই তোমার অস্ত্র বর্ষিতে থাকুক। আর কি বলিব, আমার এই শেষ কথা—আমি তোমাকে দামেস্করাজ্যের প্রধান মন্ত্রীপদ দান করিব।”
“ও কথা মুখে আনিবেন না। আপনি আমার সহিত যুদ্ধ করুন, না হয় আমার অস্ত্রের সম্মুখ হইতে সরিয়া যাউন। আমি জয়নাল আবেদীনের দাস—মোহাম্মদ হানিফার আজ্ঞাবহ। আপনার মন্ত্রী হইয়া লাভ যাহা, তাহা স্বচক্ষে দেখিতেছেন। ঐ দেখুন, বর্শার অগ্রভাগ দেখুন, আপনার এক মন্ত্রী একশত মারওয়ান-রূপ ধারণ করিয়া বর্শার অগ্রভাগে বসিয়া আছে।”
এজিদ মহাক্রোধে বলিলেন, “নিমকহারাম, কমজাৎ, কমিন্। আমার সঙ্গে তামাসা? ইহকালের মত তোর কথা কহিবার পথ বন্ধ করিতেছি।” এই বলিয়া সজোরে অলীদ শির লক্ষ্য করিয়া তিনি আঘাত করিলেন। অলীদ সে আঘাত বামহস্তস্থিত বর্শাদণ্ড দ্বারা উড়াইয়া দিতেই, ওমর অলীদের গ্রীবা লক্ষ্যে আঘাত করিল। বহু দূর হইতে ওমর আলী এই ঘটনা দেখিয়া নক্ষত্রবেগে অলীদের নিকটে আসিয়া দেখিলেন যে, এজিদ ও ওমর উভয়েই অলীদের প্রতি অস্ত্র নিক্ষেপ করিতেছেন।
ওমর আলী চক্ষু ঘুর্ণিত করিয়া কহিলেন, “এজিদ। এ দিকে কেন? মোহাম্মদ হানিফার দিকে যাও। সে দিনও দেখিয়াছ, আজিও বলিতেছি, তোমার প্রতি কখনই অস্ত্র নিক্ষেপ করিব না। তোমার শোণিতে হানিফার তরবারি রঞ্জিত হইবে। যাও, সে দিকে যাও,—আজ—”
ওমর আলীর কথা শেষ হইতে না হইতেই, ওমর অলীদ প্রতি দ্বিতীয় আঘাত করিল। সঙ্গে সঙ্গে এজিদ অলীদের অশ্বকে বর্শা দ্বারা আঘাত করিয়া তাহার বাম পার্শ্ব হইতে দক্ষিণ পার্শ্ব পর্য্যন্ত পার করিয়া দিলেন। অশ্ব কাঁপিতে কাঁপিতে মৃত্তিকায় পড়িয়া গেল। ওমর এই সুযোগে অলীদের