এজিদ বধ পর্ব
প্রথম প্রবাহ
বন্দীগৃহ। বন্দীগৃহ সুবর্ণে নির্ম্মিত, মহামূল্য প্রস্তরে খচিত, সুখসেব্য আরামের উপকরণে সুসজ্জিত হইলেও মহাকষ্টপ্রদ—যন্ত্রণাময় স্থান। সুখসম্ভোগের সুখময় সামগ্রী দ্বারা পরিপূরিত হইলেও বন্দীগৃহ, দেহদগ্ধকারী মহাকপ্রদ জ্বলন্ত অগ্নিময় নরকনিবাস। সুবর্ণ-পাত্র সুস্বাদু-সুমিষ্ট-সরস খাদ্যে পরিপূরিত, রসনা পরিতৃপ্ত করিতে সুন্দর বন্দোবস্ত ও সুব্যবস্থা থাকিলেও বন্দীগৃহ মহাকাল—যমালয়! কোন বিষয়ে অভাব অনটন না হইলেও সর্বতোভাবে মশান হইতে শ্মশান আদরের! অমুল্য রত্ন স্বাধীনতা-ধন যে স্থানে বর্জিত, সে স্থান অমরপুরী সদৃশ মন-নয়ন মুগ্ধকর সুখসম্ভোগের স্থান হইলেও মানবচক্ষে তাহা অতি কদাকার ও জঘন্য, বুদ্ধিশক্তি সম্পন্ন সঞ্জীব প্রাণীর নিকট তাহা কণ্টক সমাকীর্ণ বিসদৃশ বিজন বন। বিজন বনেও পশুদিগের স্বাধীনতা আছে, ইচ্ছানুসারে তাহাদের পরিভ্রমণ,—স্বজাতি-স্বজন পরিদর্শন ক্ষমতাও আছে, বন্দীখানায় বন্দীর ভাগ্যে তাহাও নাই। সুতরাং বাধ্য-বাধকতা, অধীন-অধীনতা সংস্রবে। স্বর্গসুখও মহা যন্ত্রণাদায়ক। যন্ত্রণাদায়ক কেন? কারণ, তাহা সুখস্বচ্ছন্দের আমূল পরিচ্ছেদক।
বন্দীর মনে নানা ভাবনা চিন্তা,—নানা কথা। কাহারও অন্তরে আঙ্গানির মহা বেগ শতধারে ও সহস্র প্রকারে ছুটিয়া হৃদয়ের অন্তঃস্থল পর্যন্ত অগ্নিদাহের ন্যায় দগ্ধ করিয়া উত্তমাঙ্গতি সপ্তঘরে তাপের শেষ পর্যন্ত