শুনিলে কে না তাহাকে ভালবাসিবে? আবদুল জব্বার নিরপরাধ ঐ অবশ সতীর মনে যে দুঃখ দিয়াছে, ইহার প্রতিফল সে অবশ্যই পাইবে।
এজিদ আসল কথার কিছুই সন্ধান পাইতেছেন না। জিজ্ঞাসা করিতেও সাহস হইতেছে না; মনের মধ্যে মনের ভাব তােলপাড় করিতেছে। কি বলিয়া জিজ্ঞাসা করিবেন, তাহাও হঠাৎ স্থির করিতে পারিলেন না। তবে মনে মনে এই একটু স্থির করিলেন,—এত প্রশংসা কেবল আমার শিক্ষার নিমিত্ত। ইহার অর্থই এই যে, আমি তাহাকে বিশেষ আদরে রাখি, যত্ন করি। এই ভাবিয়া বিশেষ অগ্রহে শুনিতে লাগিলেন।
এজিদের মাতা বলিলেন, “ধর্ম্মে মতি অনেকেরই আছে, সুশ্রীও অনেক আছে।”
এজিদের অন্তরস্থিত জয়নাবের ভ্রূযুগলের অগ্রভাগস্থ সুতীক্ষ্ণ বাণ যাহা অন্তরে বিঁধিয়াই ছিল, তাহাতে আঘাত লাগিল।
মাবিয়া কহিলেন, “অনেক আছে বটে, তবে এমন আর হইবে না। এই ত মহৎগুণের পরিচয় এখনই পাইলে। জয়নাব—রূপ, ধন, সম্পত্তির প্রতাশী নহে; রাজরাণী হইতেও তাহার আশা নাই। যাহার পদাশ্রয় গ্রহণ করিলে পরকালে মুক্তি পাইবে, তাহারই পয়গাম কবুল করিয়াছে।”
এজিদ জিজ্ঞাসা করিলেন, “কাহার পদাশ্রয় গ্রহণ করিলে পরকালে মুক্তি হয়। সে ব্যক্তি কে?”
মাবিয়া বলিলেন, “তিনি প্রভু মােহাম্মদের দৌহিত্র, মাননীয় আলীর পুত্র হাসান। তুমি যাঁহার নাম শুনিতেও কষ্ট বােধ কর, জয়নাব স্ত্রীবুদ্ধি-প্রভাবেই সেই মহাত্মার গুণ জানিয়াই তাঁহার পয়গাম সন্তোষের সহিত স্বীকার করিয়াছে। দেখ এজিদ! তুমি আর হাসান-হােসেনের প্রতি ক্রোধ করিও না। মন হইতে সে সকল পাপ দূর কর। সত্যপথ অবলম্বন কর। পৈতৃক ধর্ম্ম রক্ষা কর। পরকালের সুগম পথের দুরূহ কণ্টক সত্যধর্ম্মের জ্যোতিঃপ্রবাহে বিনষ্ট করিয়া স্বর্গের দ্বার আবিষ্কার কর। সেই সঙ্গে ন্যায়পথে থাকিয়া এই সামান্য