এজিদ অশ্বচালনায় পপিঙ্ক; প্রাণের দায়ে তিনি পথ, পথ, ব, জলের খি দিয়া অশ্ব চালাইতেছেন—পলাইতে পারিলেই রক্ষা—কিন্তু পারিতেছেন না। হানিফাকে দূরে ফেলিয়া এজিদ আত্মগোপন করিতে সক্ষম হইতেছেন না। সেই একই ভাব। যাহা কিছু প্রভেদ-অগ্র আর পশ্চাৎ। এজিদ প্রাণপণে অশ চালাইতেছেন, কিন্তু হানিফাকে দূরে ফেলিয়া তাঁহার চক্ষুর অগোচর হওয়া দুরে থাকুক, হানিফার হস্তস্থিত তরবারি অগ্রভাগ হইতে মুচ পরিমাণ গানও অগ্রে যাইতে পারিতেছেন না। সূর্য্যতেজ কমিতেছে, মোহাম্মদ হানিফার থোষও বাড়িতেছে। যতই ক্লান্ত, ততই তাঁহার রোষ বৃদ্ধি!
মোহাম্মদ হানিফা অশবগা দন্তে ধারণ করিয়া এজিদকে ধরিবার নিমিত্ত দুই হস্ত বিস্তার করিয়াছেন। দুলদুল প্রাণপণে দৌড়িতেছে, কিন্তু এদিকে ধরিতে পারিতেছে না। মোহাম্মদ হানিফা এই ধরিলেন, এইবারেই ধরিবেন, আর একটু অগ্রসর হইলেই ধরিতে পারিবেন, অশ্ব হইতে এজিদকে চুত করিবেন, কিন্তু কিছুতেই তাহা পারিতেছেন না।
এজিদ প্রাণভয়ে পলাইতেছেন। অন্য কোন কথা সে সময়ে মনে তার উদয় হইবার কথা নহে। প্রাণ বাঁচাইবার পন্থাই নানা প্রকারে মনে মনে আঁকিতেছেন। আর একটা কথাও তিনি বেশ বুঝিতেছিলেন যে, মোহাম্মদ হানিফা তাহার প্রাণধের ইচ্ছা করিলে বহু পূর্বে তাহা শেষ করিতে পারিতেন, অথচ তাহা করিতেছেন না। তাহার মন ভাকিয়া বলিতেছে, এজিদকে হানিফা ধরিবেন-মারিবেন না-প্রাণে মারিবেন না।” হইতে পারে এজিদের উপর অস্ত্র নিক্ষেপ নিষেধ! এ দুয়ের এক না হইয়া এরূপভাবে বীরের সম্মুখে—বীরের অস্ত্রের সম্মুখ হইতে এতক্ষণ পর্যন্ত বাঁচিয়া থাকা সৌভাগ্যের কথা। এখন যে কোন উপায়েই হউক হানিফার চক্ষুর অগোচর হইতে পারিলেই রক্ষা। হানিফা চিরদিন দামেস্কে বাস করিবেন না। এই সন্ধ্যা পর্যন্ত যমের হস্ত হইতে বাঁচিতে পারিলেই প্রাণ বাঁচে। সূর্যাস্ত পর্যন্ত এই প্রকার যোরাফেরা করিয়া কাটাইতে পারিলেই আর ভয়ের কারণ নাই। দেশ এবং পথ আমার পরিচিত কিন্তু হানিফার সম্পূর্ণ অপরিচিত।