পাতা:বিষাদ-সিন্ধু - মীর মোশার্‌রফ হোসেন.pdf/৫২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিষাদ-সিন্ধু
৫০২

বারবার ঘোষিত হইতে লাগিল। পরিবার-পরিজনদিগের বস্ত্রাবৃত আম্বারী পৃষ্ঠে করিয়া উষ্ট্রসকল রক্ষিগণ কর্ত্তৃক বিশেষ সতর্কে সাবধানে পরিলক্ষিত হইয়া মহারাজের পশ্চাৎ পশ্চাৎ নগরমধ্যে প্রবেশ করিল। জনস্রোতের সহিত আনন্দস্রোত প্রবাহিত—দেখিতে দেখিতে পবিত্র রওজার সম্মুখে সকলে উপস্থিত। অশ্বারোহী উষ্টারোহী স্ব স্ব বাহন হইতে অবতরণ করিলেন। কাড়া-নাকাড়ার কার্য্যসকল ক্ষণকালের জন্য বন্ধ হইল, পতাকাসকল অবনতমুখী হইয়া পবিত্র রওজার মর্য্যাদা রক্ষা করিল।

 মহারাজ জয়নাল আবেদীন—যাত্রীদল, সঙ্গীদল ও আত্মীয়-স্বজনগণ সহ পবিত্র রওজা মোবারক সপ্তবার তওয়াফ (মান্যের সহিত অতিক্রম) করিয়া পূর্ব্ব সাজ সজ্জা ও বাদ্যবাজনার সহিত জয়নিশান উড়াইয়া রাজপুরী মধ্যে প্রবেশ করিলেন। পরিবার-পরিজনেরা বহুদিনের পর—বহু যন্ত্রণা উপভোগের পর ঈশ্বরের নাম করিয়া অন্তঃপুর মধ্যে প্রবেশ করিলেন।

 গাজী রহ্‌মান, ওমর আলী প্রভৃতি কিছুদিন নবীন মহারাজের পদসেবা করিয়া হরিষে বিষাদ মিশ্রিত মনোভাবে স্ব স্ব রাজ্যে গমন করিলেন। হরিষের বিষয়—জয়নাল আবেদীনের সপরিবারে বন্দীখানা হইতে উদ্ধার, রাজ্যলাভ। বিষাদের কারণ আর কি বলব?—মোহাম্মদ হানিফা চিরবন্দী!

সমাপ্ত

২০৯ নং কর্ণওয়ালিস ষ্ট্রীট, কলিকাতা—‘বেণী প্রেস’ হইতে শ্রীদুর্গাপদ ঘোষ কর্ত্তৃক এবং ৮নং শ্যামাচরণ দে স্ট্রীট, কলিকাতা—প্রমিয়ার পাব্‌লিশিং হাউস হইতে আবদুল ওহাব সিদ্দিকী কর্ত্তৃক প্রকাশিত