সম্মানে সম্মানিত করিয়াছি। এত দিন তোমাদিগকে যত্ন করিয়া প্রতিপালন করিয়াছি। আজ আমার এই আদেশ যে, এই সজ্জিত বেশ আর পরিত্যাগ করিও না, হস্তস্থিত অসিও আর কোষে রাখিও না। ধনুর্দ্ধরগণ! তোমরা আর তূণীরের দিকে লক্ষ্য করিও না। মদিনার সম্মুখে অগ্রসর ভিন্ন আর যেন পশ্চাতে ফিরিও না। এই বেশে এই যাত্রাই শুভযাত্রা জ্ঞান করিয়া হাসান-হোসেন-বধে এখনই যাত্রা কর। যত শীঘ্র পার, প্রথমে হাসানের মস্তক অনিয়া আমাকে দেখাও। লক্ষ টাকা পুরস্কার! আমি নিশ্চয়ই জানি, তোমরা মনোযোগী হইয়া একটু চেষ্টা করিলেই উভয়ের মস্তক তোমাদের হস্তেই দামেস্কে আনীত হইবে। আমার মন ডাকিয়া বলিতেছে, তোমাদের তরবারি সেই উভয় ভ্রাতার শোণিত পান করিতে লোলুপ হইয়াছে।”
সৈন্যগণকে ইহা বলিয়া মন্ত্রীকে বলিতে লাগিলেন, “ভাই মারওয়ান! তুমি আমার বাল্যসহচর। আজ আমার প্রতিনিধিস্বরূপ তোমাকেই এই বীরদলের অধিনায়ক হইতে হইবে। তোমাকেই সেনাপত্যের ভার গ্রহণ করিতে হইবে। কারণ, হাসান-হোসেনের বধসাধনের জন্য সৈন্যদলকে মদিনায় পাঠাইতেছি। যদি এজিদের মানরক্ষা করিতে চাও, যদি এজিদের অন্তরাগ্নি নির্ব্বাণ করিতে চাও; যদি এজিদের মনের দুঃখ দূর করিতে তাহার জয়নাব-লাভের আশাতরী বিষাদ-সিন্ধু হইতে উদ্ধার করিতে চাও, তবে এখনই অগ্রসর হও, আর পশ্চাতে ফিরিও না। পূর্ব্ব হইতে সকলই আমি সমুচিতরূপে আয়োজন করিয়া রাখিয়াছি। আজ এজিদের প্রাণ তোমারই হস্তে সমর্পিত হইল। যেদিন হাসান-হোসেনের মৃত্যুসংবাদ এই নগরে আসিবে, সেই দিন জানিও যে, এজিদ পুনর্জ্জীবিত হইয়া দামেস্ক রাজভাণ্ডারের দ্বার অবারিত করিয়া দিবে; সংখ্যা করিয়া, কি হস্তে তুলিয়া দিবে না; সকলেই যথেচ্ছরূপে যথেচ্ছ পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করিবে; কাহারও আদেশের অপেক্ষায় থাকিতে হইবে না। মারওয়ান! সকল কার্য্যে ও সকল কথাতেই ‘যদি’ নামে একটি শব্দ আছে। জগতে আমি যদি কিছু ভয় করি, তবে ঐ ‘যদি’ শব্দেই সময়ে সময়ে আমার প্রাণ কাঁপিয়া উঠে। যদি যুদ্ধে