পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিক্ষার নব আদর্শ »WSJ ঘোড়া গাধা হচ্ছে- তা বলা কঠিন ; কেননা, এ বিষয়ের কোনো স্ট্যাটিষ্টিকস অদ্যাবধি সংগ্ৰহ করা হয় নি। সে যাই হােক, যে জাতীয় আদর্শের উপর জাতীয় শিক্ষা নির্ভর করে, তা যুগপৎ মনের এবং জীবনের আদর্শ হওয়া দরকার। যে দেশের জাতীয় শিক্ষা আছে, সে দেশের প্রতি ঈষৎ দৃষ্টিপাত করলেই এ সত্য সকলের কাছেই স্পষ্ট প্রতীয়মান হবে। ইউরোপে আমরা দেখতে পাই যে জার্মানি চেয়েছিল “যা নাই তাই হব’, ইংলণ্ড ‘যা আছি তাই থাকিব, আর ফ্রান্স যা আছি তাও থাকব না, যা নই। তাও হব না’ ; এবং এই তিন দেশের গত পঞ্চাশ বৎসরের কাজ ও কথার ভিতর নিজ-নিজ জাতীয় আদর্শের স্পষ্ট পরিচয় পাওয়া যাবে। কিন্তু আমাদের বিশেষত্ব এই যে, আমরা জীবনে এক পথে চলতে চাই- মনে আর-এক পথে । আমাদের ব্যক্তিগত মনের আদর্শ হচ্ছে ‘যা ছিলুম তাই হওয়া’, আর আমাদের জাতিগত জীবনের আদর্শ হচ্ছে ‘যা ছিলুম না। তাই হওয়া”। ফলে আমাদের সামাজিক বুদ্ধির মুখ প্ৰাচীন ভারতবর্ষের দিকে আর আমাদের রাষ্ট্ৰীয় বুদ্ধির মুখ নবীন ইউরোপের দিকে। এই আদর্শের উভয়সংকটে পড়ে আমরা শিক্ষার একটা সুপথ ধরতে পারছি cम- छूटल8 अश्व, मांशिङा७ मङ्ग। একজন ইংরেজ দার্শনিক বলেছেন যে, সমস্যাটা যে কী এবং কোথায়, সেইটে ধরাই কঠিন ; তার মীমাংসা করা সহজ। এ কথা সত্য। শ্ৰীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ তাই “ঘরে বাইরে’য় আমাদের জাতীয় সমস্যার ছবি একেছেন ; কেননা, ও-উপন্যাসখানি একটি রূপক-কাব্য ছাড়া আর-কিছুই নয়। নিখিলেশ হচ্ছেন প্ৰাচীন ভারতবর্ষ, সন্দীপ নবীন ইউরোপ, আর বিমলা বর্তমান ভারত। এই দোঁটানার ভিতর পড়েই বিমলা বেচারা নাস্তানাবুদ হচ্ছে, মুক্তির পথ যে কোন দিকে, তা সে খুঁজে পাচ্ছে না। এরূপ অবস্থায় এক সৎশিক্ষা ব্যতীত তার উদ্ধারের উপায়ান্তর নেই। অতএব এ ক্ষেত্রে আমাদের পক্ষে শিক্ষার একটি আদর্শ খুজে-পেতে বার করা দরকার। আমি বহু গবেষণার ফলেও সে আদর্শ আজও আবিষ্কার করতে পারি নি, সুতরাং সে আদর্শ নিজেই গড়তে বাধ্য হয়েছি। আমি স্বজাতিকে অনুরোধ করি যে, আমার এই গড়া আদর্শ যেন বিনা পরীক্ষায় পরিহার না করেন। শ্ৰীমতী লীলা মিত্র নামক জনৈক ভদ্রমহিলা ‘সবুজ পত্রে’ এই মত প্ৰকাশ করেন যে, এ দেশে স্ত্রীশিক্ষার আদর্শ ভুল, সুতরাং তার পদ্ধতিও নিরর্থক। তাঁর মতে আমরা স্ত্ৰীজাতিকে সেই শিক্ষা দিতে চাই, যাতে তারা পুরুষজাতির কাজে লাগে, সুতরাং সে