পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বীরবিলের হালখাতা ܟܠ করেছেন, তঁরা সকলেই জানেন যে, যে সাহিত্যে দম নেই, তাতে অন্তত কস (grip) थांकों अथक । R বর্তমান ইউরোপের সম্যক পরিচয়ে এই জ্ঞান লাভ করা যায় যে, গণধর্মের প্রধান ঝোক হচ্ছে বৈশ্যধর্মের দিকে ; এবং সেই কেঁকটি না সামলাতে পারলে সাহিত্যের পরিণাম অতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে । আমাদের এই আত্মাসর্বস্ব দেশে লেখকেরা যে বৈশ্যাবৃত্তি অবলম্বন করবেন না, এ কথাও জোর করে বলা চলে না। লক্ষ্মীলাভের আশায় সরস্বতীর কপট সেবা করতে অনেকে প্ৰস্তুত, তার প্রমাণ “ভ্যালু-পেয়বল পোস্ট” নিত্য ঘরে ঘরে দিচ্ছে। আমাদের নবসাহিত্যের যেনে-তেন-প্রকারেণ বিকিয়ে যাবার প্ৰবৃত্তিটি যদি দমন করতে না পারা যায়, তা হলে বঙ্গসরস্বতীকে যে পথে দাড়াতে হবে, সে বিষয়ে তিলমাত্ৰও সন্দেহ নেই। কোনো শাস্ত্রেই এ কথা বলে না যে, 'বাণিজ্যে বসতে সরস্বতী’। সাহিত্যসমাজে ব্রাহ্মণত্ব লাভ করবার ইচ্ছে থাকলে দারিদ্র্যকে ভয় পেলে সে । আশা সফল হবে না । সাহিত্যের বাজার-দর সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞান যত বাড়বে, সেইসঙ্গে তার মূল্য সম্বন্ধে জ্ঞান আমাদের লোপ পেয়ে আসবে। সুতরাং আমাদের নবসাহিত্যে লোভ-নামক রিপুর অস্তিত্বের লক্ষণ আছে কি না, সে বিষয়ে আমাদের দৃষ্টি থাকা আবশ্যক ; কেননা, শাস্ত্রে বলে, লোভে পাপ পাপে মৃত্যু । VO) এযুগের মাসিকপত্ৰসকল যে সচিত্র হয়ে উঠেছে সেটি যেমন আনন্দের কথা, তেমনি আশঙ্কারও কথা। ছবির প্রতি গণসমাজের ষে একটি নাড়ির টান আছে, তার প্রচলিত প্ৰমাণ হচ্ছে মার্কিন সিগারেট। ঐ চিত্রের সাহচর্যেই যত অচল সিগারেট বাজারে চলে যাচ্ছে ; এবং আমরা চিত্ৰমুগ্ধ হয়ে মহানন্দে তাম্রকুটজ্ঞানে খড়ের ধূম পান করছি। ছবি ফাউ দিয়ে মেকি মাল বাজারে কাটিয়ে দেওয়াটা আধুনিক ব্যাবসার একটা প্ৰধান অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ দেশে শিশুপাঠ্য গ্ৰন্থাবলীতেই চিত্রের প্রথম আবির্ভাব। পুস্তিকায় এবং পত্রিকায় ছেলেভুলোনো ছবির বহুল প্রচারে চিত্রকলার যে কোনো উন্নতি হবে, সে-বিষয়ে বিশেষ সন্দেহ আছে; কেননা, সমাজে গোলাম পাস করে দেওয়াতেই বণিকবুদ্ধির সার্থকতা, কিন্তু সাহিত্যের যে অবনতি হবে, সে-বিষয়ে আর কোনো সন্দেহ নেই। নর্তকীর পশ্চাৎ-পশ্চাৎ সারঙ্গীর মতো চিত্রকলার পশ্চাৎ-পশ্চাৎ কাব্যকলার অনুধাবন করাতে তার পদমৰ্যাদা বাড়ে না। একজন যা করে, অপরে তার দোষগুণ বিচার করে,