পাতা:বীরবলের হালখাতা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“যৌবনে দাও রাজটিক” r হয় তারই সন্ধান জানে, কিন্তু গাছকে কী করে ছোটাে করতে হয় সে কৌশল শুধু জাপানিৱাই জানে। একটি বটগাছকে তারা চিরজীবন একটি টবের ভিতর পুরে রেখে দিতে পারে। শুনতে পাই, এই-সব বামন-বট হচ্ছে অক্ষয়বট। জাপানিদের বিশ্বাস যে, গাছকে হ্রস্ব করলে তা আর বৃদ্ধ হয় না। সম্ভবত আমাদেরও মনুষ্যত্বের চর্চা সম্বন্ধে এই জাপানি আর্ট জানা আছে, এবং বাল্যবিবাহ হচ্ছে সেই আর্টের একটি প্ৰধান অঙ্গ। এবং উক্ত কারণেই অপর-সকল প্ৰাচীন সমাজ উৎসরে গেলেও আমাদের সমাজ আজও টিকে আছে। মনুষ্যত্ব খর্ব করে মানব-সমাজটাকে টবে জিইয়ে রাখায় যে বিশেষ-কিছু অহংকার করবার আছে, তা আমার মনে হয় না। সে যাই হোক, এ যুগে যখন কেউ যৌবনকে রাজটিকা দেবার প্রস্তাব করেন, তখন তিনি সমাজের কথা ভাবেন, ব্যক্তিবিশেষের কথা নয়। ব্যক্তিগত হিসেবে জীবন ও যৌবন অনিত্য হলেও মানবসমাজের হিসেবে ও দুই পদার্থ নিত্য বললেও অত্যুক্তি হয় না। সুতরাং সামাজিক জীবনে যৌবনের প্রতিষ্ঠা করা মানুষের ক্ষমতার বহির্ভূত না হলেও না হতে পারে। কী উপায়ে যৌবনকে সমাজের যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করা যেতে পারে, তাই হচ্ছে বিবেচ্য ও বিচাৰ্য । এ বিচার করবার সময় এ কথাটি মনে রাখা আবশ্যক যে, মানবজীবনের পূর্ণ অভিব্যক্তি- যৌবন। যৌবনে মানুষের বাহেন্দ্ৰিয় কর্মেন্দ্ৰিয় ও অন্তরিান্দ্ৰিয় সব সজাগ ও সবল হয়ে ওঠে, এবং স্বষ্টির মূলে যে প্রেরণা আছে, মানুষের সেই প্রেরণা তার সকল অঙ্গে, সক . মনে অনুভব করে । দেহ ও মনের অবিচ্ছেদ্য সম্বন্ধের উপর মানবজীবন প্ৰতিষ্ঠিত হলেও দেহমনের পার্থক্যের উপরেই আমাদের চিন্তাৱাজ্য প্রতিষ্ঠিত। দেহের যৌবনের সঙ্গে মনের যৌবনের একটা যোগাযোগ থাকলেও দৈহিক যৌবন ও মানসিক যৌবন স্বতন্ত্র। এই মানসিক যৌবন লাভ করতে পারলেই আমরা তা সমাজে প্ৰতিষ্ঠা করতে পারব। দেহ সংকীর্ণ ও পরিচ্ছন্ন ; মন উদার ও ব্যাপক। একের দেহের যৌবন অপরের দেহে প্ৰবেশ করিয়ে দেবার জো নেই ; কিন্তু একের মনের যৌবন লক্ষ লোকের মনে সংক্রমণ KG GINS GRV of 幣 পূর্বে বলেছি যে, দেহ ও মনের সম্বন্ধ অবিচ্ছেদ্য। একমাত্ৰ প্ৰাণশক্তিই জড় ও চৈতন্তের যোগ সাধন করে। যেখানে প্ৰাণ নেই, সেখানে জড়ে ও চৈতন্যে মিলনও দেখা যায় না। প্ৰাণই আমাদের দেহ ও মনের মধ্যে মধ্যস্থতা করছে। প্ৰাণের