পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১১০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের আহ্বান

মানব, তুমি আমার নিকটে আইস, আমি তোমাকে সেকালের কোনো পুরাতন কথা বলিব না, আমি তোমাকে কোনো দুর্জ্ঞেয় রহস্যের কথা বলিব না, আমি তোমাকে পরের কথায় বিশ্বাস করিতে বলিব না; আমি তোমাকে যাহা বলিব তাহা তুমি নিজের চক্ষু দিয়া দেখিয়া লও, বুদ্ধি দিয়া বিচার করিয়া গ্রহণ কর, ইহার সুফল তুমি অবিলম্বে বুঝিতে পারিবে; আমি যাহা বলিব সমস্ত সুস্পষ্ট ও সমস্ত সুপ্রত্যক্ষ।

 বুদ্ধদেবের বাণী যাঁহারা পাঠ করিবেন, তাঁহারা ইহার অসামান্য সরলতায় তেজস্বিতায় ও সুযুক্তিতে বিম্মিত না হইয়া থাকিতে পারিবেন না। সূর্য্যালোক যেমন ধরণীর সর্ব্বাঙ্গ প্রকাশিত করিয়া দেয়, মহাপুরুষ বুদ্ধের স্থির প্রজ্ঞার বিমল আলোক তেমনি মানবের সাধনমার্গের সর্ব্বাঙ্গ প্রকাশিত করিয়া দিয়াছে।

 শাস্ত্রবিধি ও লোকাচারের কাছে আপনার বুদ্ধি ও যুক্তিকে বলি দিয়া মানুষ যে সহজ সত্য বিস্মৃত হইয়াছিল, বুদ্ধদেবের নির্ম্মল বোধ সেই সত্যকেই প্রত্যক্ষ করিয়াছিল। সুতরাং, তিনি দার্শনিকতার দিকে পাণ্ডিত্যের দিকে না যাইয়া, সকলের উপযোগী ভাষায় তাঁহার সুখকর কল্যাণকর ধর্ম্মমত ব্যাখ্যা করিলেন। তিনি বেদ বেদান্ত তর্কশাস্ত্রের আশ্রয় ছাড়িয়া দেশবাসীর ন্যায়, বুদ্ধি, সাধারণ যুক্তি এবং তাহাদেরই কথিত ভাষার শরণ লইলেন। বুদ্ধ যাহা বলিলেন, তাহা একান্ত সরল বলিয়া মানবের চিত্ত, বুদ্ধি ও বিচারশক্তি অসঙ্কোচে তাহাতে সায় দিল। এইজন্যই তাঁহার প্রচারিত ধর্ম্মমত সর্ব্ব বাধা অতিক্রম করিয়া অল্প দিনের মধ্যেই সমস্ত এসিয়াখণ্ডের ধর্ম্ম হইয়াছিল।

৭৯