পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১১৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

যদি কোন ব্যক্তি পুণ্যকর্ম্ম করে, তাহা হইলে সে যেন ইহা পুনঃ পুনঃ করে—যেন ইহাতে তাহার অনুরাগ জন্মায়; কারণ পুণ্যসঞ্চয় সুখকর।

 পুণ্যানুষ্ঠানকে আমাদের সহজ করিয়া ফেলিতে হইবে, কর্ত্তব্যবোধে নয়, অন্যের অনুরোধে নয়; নিজের মনের আনন্দে আমাদিগকে পুণ্য আচরণ করিতে হইবে। পাখী যেমন মনের আনন্দে গান গায়, ফুল যেমন সহজে ফুটিয়া উঠে, তেমনি আনন্দে তেমনি সহজে আমরা আপনাদিগকে কল্যাণ ব্রতে নিয়োজিত করিব। অভ্যাস দ্বারা পুণ্যানুষ্ঠানগুলি যখন এমন অনায়াস হইয়া উঠে, তখনই সেগুলি মঙ্গল হইয়া উঠে। বুদ্ধ বলেনঃ—

ভদ্রো পি পস্‌সতি পাপং যাব ভদ্রং ন পচ্চতি
যদা চ পচ্চতি ভদ্রং অথ ভদ্রো ভদ্রানি পস্‌সতি॥

যাবৎ পুণ্যকর্ম্ম পরিপাক প্রাপ্ত না হয়, তাবৎ সাধু ব্যক্তি পুণ্য কর্ম্মের মধ্যেও অশুভ দর্শন করিয়া থাকেন; কিন্তু যখনি পুণ্যকর্ম্ম পরিপক্ব হয়, তখনি তিনি মঙ্গল দর্শন করেন। পরিপক্ব বস্তু যেমন আমাদের রক্তমাংসে পরিণত হইয়া আমাদেরই অঙ্গীভূত হইয়া থাকে, অভ্যাস দ্বারা পুণ্যাচরণকে তেমনি আমাদের মনের সহজ বিষয় করিয়া ফেলিতে হইবে। মন যখন এইরূপ স্বাভাবিক পুণ্যপ্রভায় মণ্ডিত হইবে, তখনই আমাদের প্রত্যেক অনুষ্ঠান মঙ্গল হইয়া উঠিবে।

 বাস্তবতার দিকে বৌদ্ধধর্ম্মের ঝোঁক থাকিলেও নীতির ক্ষেত্রে এই ধর্ম্ম ভাবকে অতি উচ্চ আসন দিয়াছে। বৌদ্ধনীতি জোরের সহিত এই কথাই প্রচার করিয়া থাকে যে, তুমি যাহা বল, তুমি

৮৬