পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৶৹

তাহাই বুঝি একান্ত সত্য। কিন্তু এই কথাই কি পরম সত্য? প্রত্যেক বস্তুই ও প্রত্যেক মানবই যে আবার তাহার ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য সকল সীমা অতিক্রম করিয়া মহাগৌরবে বিরাজমান এই লীলাই ত সাধক দেখিতে চাহেন? সাধকের সাধনাপূত নয়নে অণু আর অণু নাই—“সমত্বং গিরি সর্ষপয়াঃ”—“সর্ষপ ও পর্ব্বত দুই-ই সমান” এইখানেই দর্শক ও পূজক একান্ত বিভিন্ন হইয়া গিয়াছেন। যে কেবলমাত্র চাহিয়া দেখিতেছে সে ত বস্তুর চতুর্দ্দিকস্থ ক্ষুদ্র সীমাগুলিকেই বড় করিয়া দেখিবে; কিন্তু যে হৃদয় দিয়া দেখিতেছে ও পূজা করিতেছে সে ত এই সীমার বন্ধন হইতে মুক্তিলাভ করিয়া বসিয়াছে।

 এইখানেই ঐতিহাসিকে ও ভক্তে প্রভেদ। ঐতিহাসিকের কাছে কোন বিশেষ ব্যক্তি কোন বিশেষ স্থান বা কোন বিশেষ কাল তাহার আপনার চতুর্দ্দিকের সীমার মধ্যে আবদ্ধ; কিন্তু ভক্তের নয়নে সেই সব সীমা কোথায় মিলাইয়া যায়! সকল জগৎ যেমন, ব্রজভূমিও তেমনি, কিন্তু বৈষ্ণবের নয়নে সেই ভূমির কি আর তুলনা আছে? সে যে দেখে না, সে পূজা করে। যখন মহাপ্রভু চৈতন্য জন্মগ্রহণ করেন তখনও দিনরাত্রি আজিকারই মত নিষ্পন্ন হইত; কিন্তু সেই পুণ্যযুগে জন্মগ্রহণ করেন নাই বলিয়া ভক্ত বৈষ্ণব বাসুদেব ঘোষ জীবনকে ধিক্কার দিয়া বলিয়াছেন—“জীবন বৃথা,” নরোত্তম দাস বলিয়াছেন—“নরোত্তম দাস কেন না গেল মরিয়া।”

 বুদ্ধ খৃষ্ট মহম্মদ চৈতন্য প্রভৃতির ন্যায় যে সব মহাপুরুষ জগতে জন্মগ্রহণ করেন, তাঁহারা যে কেবলমাত্র এই জগৎকে পবিত্র করিয়া যান তাহা নহে; তাঁহারা আমাদের একটী সুগভীর উপকার