পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১৩১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

একবার কূপ হইতে ঊর্দ্ধে উঠিলেই অনন্ত ব্রহ্মাণ্ড প্রত্যক্ষগোচর হইবে। তুমি ওঠ, জাগরিত হও; স্বার্থত্যাগ করিয়া পরার্থে জাগরিত হও; ক্ষুদ্রতা ত্যাগ করিয়া বিরাটকে গ্রহণ কর; আপনার মধ্যে ক্ষুদ্র আপনাকে অন্বেষণ না করিয়া সর্ব্বজীবের ও সর্ব্বভূতের মধ্যে আপনার বৃহৎ মূর্ত্তি প্রত্যক্ষ কর।

 হে ধর্ম্মপথের যাত্রী, তুমি তোমার প্রীতিকে বাধাহীন সীমাহীন করিয়া সর্ব্বদেশে সর্ব্বকালে প্রসারিত কর। তুমি ইহ জীবনেই আপনার বিরাট্‌সত্তা অনুভব করিতে পার, ইহাই তোমার শ্রেষ্ঠ গৌরব; তুমি স্বয়ং আপনার প্রদীপস্বরূপ হইয়া, আত্মশক্তি দ্বারা চরম কল্যাণ লাভ করিতে পার, ইহাই তোমার পরম গৌরব। যে দিন বিমল বোধি লাভ করিয়া তুমি ধন্য হইবে সে দিন তোমার স্বার্থ বিশ্বজনের স্বার্থ হইবে, সে দিন তোমার কল্যাণ বিশ্ববাসীর কল্যাণ হইবে।

 ইহ জীবনেই আপনার বিরাট্‌সত্তা অনুভব করিয়া নির্ব্বাণামৃতলাভ সম্ভবপর বলিয়া বৌদ্ধসাধু জীবনকে অতি মূল্যবান্‌ বলিয়া মনে করেন। সুখ দুঃখ আনন্দ নিরানন্দ এমনকি মৃত্যুপর্যন্ত অগ্রাহ্য করিয়া সর্ব্বভূতের মঙ্গলসাধনে তিনি অকুণ্ঠিতচিত্তে আপনাকে অর্পণ করিয়া থাকেন; কারণ তিনি অনুভব করিয়া থাকেন যে, তিনি বিচ্ছিন্ন নহেন, সমস্তের সহিত নিগূঢ় যোগে সংযুক্ত এবং সর্ব্বভূতের মঙ্গলই তাহার মঙ্গল। আপনার ক্ষুদ্রসত্তার সম্পূর্ণ বিসর্জ্জন এবং বিরাট্‌সত্তার মধ্যে অবস্থানই বৌদ্ধজীবনের শ্রেষ্ঠ পরিণতি।


১০০