পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১৪৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

পারি। কোশলরাজ্যে মনসাকৃৎ গ্রামে আম্রকাননে ভগবান্‌ বুদ্ধ এক সময়ে প্রচারে নিযুক্ত ছিলেন। এই সময়ে ভরদ্বাজ ও বশিষ্ঠনামক দুই ব্রাহ্মণ-কুমার তাঁহার নিকট ধর্ম্মরহস্য মীমাংসার জন্য গমন করেন। তিনি যুবকদ্বয়কে বলিলেন—তথ্যগতের ধর্ম্মসাধনার প্রারম্ভে প্রেম; প্রেমেই এই সাধনার উন্নতি ও গতি এবং প্রেমেই এই সাধনার পরিণতি। * * *

 তথাগত তাঁহার প্রতিপূর্ণ মন ব্রহ্মাণ্ডের চারিদিকে প্রসারিত করিয়া দিয়া থাকেন। এইরূপে তাঁহার উর্দ্ধ অধঃ পুরঃ পশ্চাৎ সর্ব্ব স্থানই প্রীতির রসে পূর্ণ হইয় উঠে।

 বিশ্বপ্রেম বা বিশ্বমৈত্রী বৌদ্ধদর্শনে অতি উজ্জ্বলরূপে অভিব্যক্ত হইয়াছে। বৌদ্ধদর্শনে প্রশ্ন উত্থাপিত হইল, ভিক্ষু কিপ্রকারে মৈত্রীযুক্ত চিত্তের দ্বারা দিক্‌সমূহকে প্রকাশিত করিয়া বিহরণ করিবেন? উত্তরে উক্ত হইয়াছে,—লোকে যেমন কোন এক হৃদয়ঙ্গম প্রিয়ব্যক্তিকে দর্শন করিয়া মৈত্রী করিয়া থাকে, এইরূপ সমস্ত জীবকে মৈত্রীর দ্বারা প্রকাশিত করিতে হইবে। অভিধর্ম্মপিটকে মৈত্রী-ভাবনা এইরূপ বর্ণিত হইয়াছে—সাধক ভাবিবেন, সমস্ত জীব বৈরীরহিত হইয়া, বাধারহিত হইয়া, সুখী হইয়া নিজেকে পরিচালিত করুক! সমস্ত প্রাণী, সমস্ত ভূত, সমস্ত ব্যক্তি ও জন্মগ্রাহী বৈররহিত হইয়া বাধারহিত হইয়া সুখী হইয়া নিজেকে পরিচালিত করুক! সমস্ত স্ত্রী, সমস্ত পুরুষ, সমস্ত আর্য্য, সমস্ত অনার্য্য, সমস্ত দেব, সমস্ত মনুষ্য ও সমস্ত নরকাদিস্থিত জীব বৈররহিত হইয়া বাধারহিত হইয়া সুখী হইয়া নিজেকে পরিচালিত করুক।

১১৬