পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১৫৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

চিকিৎসালয় দান করিয়াছেন। বৌদ্ধ সাধুদের অসামান্য স্বার্থত্যাগ সংযম, দয়া ও প্রেমের দৃষ্টান্ত পাঠকমাত্রেরই চিত্ত বিস্ময়রসে অভিষিক্ত করে, সন্দেহ নাই।

 বৌদ্ধ সাধকের চরম লাভ নির্ব্বাণ। যে সাধনপ্রণালীর মধ্য দিয়া তিনি তাঁহার লক্ষ্যে উপনীত হন, তাহা আলোচনা করিলে মনে হয়, নির্ব্বাণ বিশুদ্ধ জ্ঞানের ও বিশুদ্ধ প্রেমেরই চরম পরিণতি; ইহা নাস্তিবাচক শূন্যতা নহে। এই সাধনার নির্ব্বাণ, সমস্ত কুপ্রবৃত্তির নির্বাণ—ক্ষুদ্র আমিত্বের নির্ব্বাণ—হিংসা-দ্বেষ প্রভৃতি পাপলালসার প্রদীপ্ত শিখার চিরনির্ব্বাণ। আর এক দিক হইতে বলা যায়, নির্ব্বাণ—পাপপ্রবৃত্তির নির্ব্বাণ, প্রেমের নহে—ক্ষুদ্র সত্তার নির্ব্বাণ, বৃহৎ সত্তার নহে—অকল্যাণের নির্ব্বাণ, কল্যাণের নহে।

 নির্ব্বাণকে দার্শনিকগণ নানারূপে ব্যাখ্যা করিয়া থাকেন এবং তাঁহারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ মত সমর্থন করিবার জন্য নানা যুক্তি দেখাইয়া থাকেন। নির্ব্বাণ যদি বৌদ্ধদর্শনের শূন্যতা হয়, তাহা হইলেও ইহা এক অনির্ব্বচনীয় পরম পদার্থ। সেই শূন্যতা “নাস্তি” নহে; তাহা “অস্তি” “নাস্তি” দুয়েরই অতীত, তাহা বাক্য মনের অনধিগম্য তাহা অক্ষর অপ্রমেয় ও গম্ভীর। এই শূন্যতাকে যদি পরমাত্মা, ব্রহ্ম, বিশ্বসত্তা, পূর্ণতা, Everlasting yea বা এই শ্রেণীর অন্য কোনো একটা নাম দেওয়া হয়, তাহা হইলে গুরুতর ভ্রম হয় বলিয়া মনে হয় না। যে শূন্যতা একেবারেই নাস্তি তাহা এমন কিছু লোভনীয় নহে যে ইহারই জন্য সাধক প্রাণপণ সংগ্রাম করিবেন। জ্ঞানমূলক “নেতির” দ্বারা বৌদ্ধসাধক

১২২