পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৷৷৴৹

তাঁহারা নিজেরাও তার সবটা ভাবিয়া দেখেন না। সাধক সাধনা করিয়া সেই সব তাৎপর্য্য বাহির করিয়া লয়েন।

 মহাসাধকদের বাণী-ই মন্ত্র। মন্ত্র মাত্রেই বীজমন্ত্র। বীজের মধ্যে যে রূপটি প্রচ্ছন্ন আছে তাহা কি শস্যের দোকানের পাষাণভিত্তিতে স্তপীকৃত বীজের মধ্যে প্রকাশ পায়? ভক্তের সরস চিত্তউদ্যানে তাহার অন্তর-নিহিত শ্যামলতা, নানা পুষ্পবর্ণ বিচিত্রতা, নানা ফলনিহিত মাধুর্য্য ধরা পড়িয়া যায়। তার স্পন্দন, কম্পন, ছায়া রূপরসগন্ধ দেহমনপ্রাণকে জুড়াইয়া দেয়।”

 বুদ্ধ সাধক ছিলেন না, একথা যিনি বলেন তাঁহাকে বলিবার মত আমার কিছু নাই। যে মহাসাধক তিনি ছিলেন—তাঁহার বাণী কি মন্ত্র না হইয়া যায়? তাহা না হইলে কি জগতের সর্ব্বাপেক্ষা অধিক মানব তাঁহার বাণীতে আশ্রয় পাইয়া বাঁচিয়া যায়? শাস্ত্র দেখিয়া কি সেই বাণীর সব সার্থকতা বুঝা যায়? তাই গ্রন্থকার যত পারেন শাস্ত্র হইতে রত্ন সংগ্রহ করিয়াছেন কিন্তু মাঝে মাঝে সেই রত্নাবলীর তাৎপর্য্যের জন্য বুদ্ধের সব সাধকদের দুয়ারে হাত পাতিয়াছেন, তাঁহার গ্রন্থে এমন একটি পংক্তি নাই যাহা হয় বৌদ্ধশাস্ত্র, না হয় কোন ভক্তজনের গ্রন্থ হইতে না লইয়াছেন! শাস্ত্রের এবং ভক্তের কাছে বাণী ও উপদেশ ভিক্ষা করিয়া ঐতিহাসিক যাথাতথ্যের দিকে চক্ষু রাখিয়া সাধক বুদ্ধের চরণে মন নত করিয়া যে অমৃত তিনি আজ আমাদিগকে পরিবেষণ করিয়াছেন তার জন্য তাঁহার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করিয়া পারি না।

 এমন গ্রন্থের আরম্ভে প্রগল্‌ভতা সাজে না। ইতিপূর্ব্বেই যতখানি অপরাধ করিয়াছি তাহার জন্য ক্ষমা ভিক্ষা করিয়া আমি এখানেই নিবৃত্ত হইব।