পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/২৭

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

সুপণ্ডিত কার্লাইল সাহেব ১৮৭৫ খৃস্টাব্দে কপিলবাস্তুর অবস্থান নির্ণয় করিয়াছেন। এই প্রাচীন নগরটি যেস্থানে বিদ্যমান ছিল, উক্তস্থান এখন ভুইলাগ্রাম নামে পরিচিত। গ্রামের সমীপে একটি হ্রদ আছে এবং অনতিদূরে একটি নদী প্রবাহিত। বুদ্ধের জন্মভূমি কপিলবাস্তু বারাণসীধাম হইতে শতাধিক মাইল উত্তরে এবং অযোধ্যা হইতে ২৫ মাইল উত্তরপূর্ব্বে অবস্থিত।

 বুদ্ধচরিত-প্রণেতা অশ্বঘোষ বলেন যে, এই স্বভাবসুন্দর নগর এককালে কপিল ঋষির সাধনক্ষেত্র ছিল এবং সেইজন্যই নগরটির নাম কপিলবাস্তু হইয়াছে। অশ্বঘোষের অপর কাব্য সৌন্দরানন্দে কথিত আছে যে, সূর্য্যবংশীয় একব্যক্তি পিতৃশাপগ্রস্ত হইয়া কপিল মুনির আশ্রমে আশ্রয় লাভ করিয়াছিলেন; কালক্রমে তাঁহার বংশধরেরা এখানে রাজ্য প্রতিষ্ঠা করিয়া রাজত্ব করিতে থাকেন। ইহার শাকবন-বেষ্টিত ঋষির আশ্রমে বাস করিতেন বলিয়া “শাক্য” আখ্যা পাইয়াছিলেন।

 শাক্যবংশীয়েরা যে এককালে ভুজবলে ও সমৃদ্ধিতে প্রাধান্য লাভ করিয়াছিলেন, সে বিষয়ে সন্দেহ করিবার কোন হেতু নাই। ইঁহারা যে প্রদেশ অধিকার করিয়া বাস করিতেন, তাহার মধ্যে কপিলবাস্তু, শিলাবতী, সক্কর, দেবদহ প্রভৃতি অনেকগুলি সমৃদ্ধ নগরীর উৎপত্তি হইয়াছিল। হলচালন ও পশুপালনই যে রাজ্যের অধিবাসীদের প্রধান উপজীবিকা, সেখানে খুব পাশাপাশি বহু নগর গঠিত হইতে পারে না। সুতরাং সমৃদ্ধিশালী শাক্যরাজ্য যে বহুদূরব্যাপী ছিল, তদ্‌বিষয়ে সন্দেহ নাই।

 পুণ্যবান শুদ্ধোদন এই সুবিস্তৃত রাজ্যের রাজা ছিলেন।