পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৪০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
গৃহত্যাগ ও দেশপর্য্যটন

 সাধ্বী গোপা স্বামীর বিষণ্ণ মুখ দেখিয়া একান্ত চিন্তিত হইলেন। সিদ্ধার্থের মনে এক্ষণে আর দ্বিতীয় কোন চিন্তা নাই, কি করিয়া জীবকুল জরা ব্যাধি মৃত্যুর দুঃখ হইতে মুক্তিলাভ করিবে তিনি অহোরাত্র তাহাই ভাবিতে লাগিলেন। এই মহাভাবের নেশায় তিনি এমনি মত্ত হইলেন যে, সর্ব্বস্ব ত্যাগ করিয়া এই মুক্তির পথ আবিষ্কার ব্যতীত তাহার সুখ নাই, শান্তি নাই, আনন্দ নাই। সংসারবন্ধন ছিন্ন করিয়া তিনি গৃহত্যাগ করিবার শুভমুহূর্ত্ত খুঁজিতে লাগিলেন।

 গভীর রাত্রি, রাজপুরবাসীরা নিদ্রিত। সিদ্ধার্থ বিনিদ্রভাবে তাঁহার সুপ্ত পত্নী গোপার কক্ষে গভীর ধ্যানে নিমগ্ন ছিলেন। তখন তিনি তাঁহার হৃদয়ের নিভৃত স্থানে “বাণী” শুনিলেন—“সময় উপস্থিত।”

 নিদ্রিতা পত্নী ও সুখসুপ্ত নবজাত পুত্রের মুখের দিকে একবার স্নেহকরুণ দৃষ্টিতে চাহিয়া সিদ্ধার্থ ধীরভাবে কক্ষের বাহিরে আসিলেন। সেই স্তব্ধ নিশীথে চন্দ্র, তারকা, অসীম আকাশ, সকলে যেন সমতানে তাঁহাকে সীমাহীন উন্মুক্ত পথে বাহির হইবার নিমিত্ত আনন্দে আহ্বান করিতে লাগিল।

 তিনি তাঁহার সারথি ছন্দককে জাগাইয়া কহিলেন—অবিলম্বে অশ্ব প্রস্তুত কর, সংসার ত্যাগ করিয়া আমাকে সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করিতে হইবে, তুমি আর এক মুহূর্ত্তও বিলম্ব করিওনা।

 সিদ্ধার্থকে ফিরাইবার জন্য বুদ্ধিমান্‌ সারথি নানা যুক্তি দেখাইলেন, নানা তর্ক উত্থাপন করিলেন, কিন্তু তাহার কোন যুক্তি কোন তর্ক টিঁকিল না। সেই গভীর নিশীথে অশ্বপৃষ্ঠে একমাত্র সারথিকে

১৫