পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৪১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

বুদ্ধের জীবন ও বাণী

লইয়া তিনি রাজভবন ত্যাগ করিয়া অসঙ্কোচে অপরিজ্ঞাত পথে বাহির হইয়া পড়িলেন।

 এই সময়ে সিদ্ধার্থের মনে যে সংগ্রাম চলিতেছিল, বৌদ্ধগ্রন্থে তাহার রূপকবর্ণনা প্রদত্ত হইয়াছে। কথিত আছে, গৃহত্যাগের দিন রাত্রিকালে কামলোকের অধিপতি “মার” শূন্যমার্গে থাকিয়া সিদ্ধার্থকে রাজ্যৈশ্বর্য্যভোগ-সুখের প্রলোভনে প্রলুদ্ধ করিতে চেষ্টা করেন। বাহির হইতে অনন্তজীবের অব্যক্ত আহ্বানে সিদ্ধার্থ যখন সর্ব্বত্যাগী হইয়া পথে দাঁড়াইয়াছিলেন, তখন স্ত্রী পুত্র জনক জননীর স্নেহপাশ এবং আজন্ম অধুষিত প্রাসাদের সুখস্মৃতি যে তাঁহাকে পশ্চাৎ হইতে টানিতেছিল সে বিষয়ে সন্দেহ নাই। এই মানস সংগ্রাম যতই কঠোর হউক, সিদ্ধার্থ কিছুতেই বিচলিত না হইয়া সমস্ত রাত্রি ক্ষিপ্রবেগে চলিতে লাগিলেন এবং বহুযোজন পথ অতিক্রম করিয়া অণোমানদীর তীরে প্রভাতের শিশির-স্নাত স্নিগ্ধ অরুণালোক দেখিতে পাইলেন।

 নদী অতিক্রম করিয়া সিদ্ধার্থ অশ্ব হইতে অবতরণ করিলেন। নদীসৈকতে দাঁড়াইয়া তিনি আপনাকে নিরাভরণ করিয়া পরিচ্ছদ সারথির হস্তে সমর্পণ করিলেন এবং বলিলেন—“তুমি আমার আভরণ ও অশ্ব লইয়া গৃহে ফিরিয়া যাও।” ছন্দক কহিলেন, “প্রভু, আমাকেও সন্ন্যাসব্রত-গ্রহণের অনুমতি দান করিয়া আপনার সেবক হইবার আদেশ করুন।”

 সিদ্ধার্থ বলিলেন—“না ছন্দক, তোমাকে অবিলম্বে কপিলবাস্তুনগরে ফিরিয়া গিয়া, জনক জননী আত্মীয়স্বজনদিগকে আমার সংবাদ জানাইতে হইবে।” ইহার পরে সিদ্ধার্থ তরবারির দ্বারা

১৬