পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৪৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

বুদ্ধের জীবন ও বাণী

সুখ চির আনন্দ। ইহলোকে যিনি যত দুঃখ স্বীকার করিয়া সাধনা করিবেন, স্বর্গে তিনি তত বেশী আনন্দলাভ করিতে পারিবেন।

 সাধুদের মুখে এইরূপ উত্তর শুনিয়া সিদ্ধার্থের মনে স্বৰ্গসম্বন্ধে প্রশ্ন উঠিল এবং তিনি সাধুদের সহিত যে আলোচনা করিয়াছেন উহার সংক্ষিপ্ত মর্ম্ম এইরূপ—

 সাধুরা যে স্বর্গে বিশ্বাস করেন সেখানে স্বর্গগত মানব নির্দ্দিষ্ট কালের জন্য বাস করেন, নির্দ্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হইয়া গেলে আবার তাঁহাকে পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিতে হয়। সুতরাং স্বর্গলাভ দ্বারা নিত্যানন্দকে লাভ করা যায়, একথা স্বীকার করা যাইতে পারে না।

 পৃথিবীতে আমরা যে সুখ অল্প পরিমাণে অল্পকালের জন্য ভোগ করি স্বর্গে সেই সুখ অধিক মাত্রায় দীর্ঘকালের জন্য ভোগ করা যাইতে পারে। শাস্ত্রবর্ণিত স্বৰ্গে দৈহিক সম্ভোগসামগ্রীর কোন অভাব নাই—দেবতাদের প্রমোদভবনে উর্ব্বশী মেনকা রম্ভা প্রভৃতি যুবতীরা নৃত্য গীতে সকলের মনোরঞ্জন করেন। স্বৰ্গবাসীরা কেহই কামনাবর্জ্জিত নহেন, মর্ত্ত্যবাসীদের ন্যায় তাঁহদেরও কাম ক্রোধ হিংসা দ্বেষ আছে।

 স্বর্গগত মানবদের ও দেবগণের দেহ আছে, অতএব দেহ সম্বন্ধীয় সর্ব্ববিধ কামনা তাঁহাদের থাকিবেই। সুতরাং স্বৰ্গবাসীরা মর্ত্ত্যমানবের মতই সুখ দুঃখ ভোগ করেন। মর্ত্ত্যবাসীদের জীবনের পরিসর অতি অল্প বলিয়া তাহারা অল্পকাল অস্থায়ী সুখ দুঃখ ভোগ করিয়া থাকেন—স্বৰ্গবাসীদিগকে এই সুখ দুঃখের ঘাত প্রতিঘাত

১৮