পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৪৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
গৃহত্যাগ ও দেশপর্য্যটন

ছাত্রদের অধ্যাপকত্ব গ্রহণ করিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু সিদ্ধার্থের মন সেই অনুরোধ রক্ষা করিতে সম্মত হইল না। তিনি স্পষ্টই বুঝিলেন যে, তাঁহার গুরু তাঁহাকে কিঞ্চিৎ শাস্ত্রজ্ঞান দান করিয়াছেন বটে, কিন্তু মুক্তির যে উদার পন্থা আবিষ্কারের জন্য তিনি আত্মোৎসর্গ করিয়াছেন, তাহা গুরুর অধিগম্য নহে। অগত্য তিনি তাঁহার আশ্রম ত্যাগ করিলেন। আধ্যাত্মিক সত্যানুন্ধানের জন্য সিদ্ধার্থের ঐকান্তিক অনুরাগ দেখিয়া রুদ্রকের পাঁচজন শিষ্য তাঁহার অনুগামী হইলেন। ইহাদের নাম কৌণ্ডিণ্য, অশ্বজিৎ, ভদ্রিক, বপ্র ও মহানাম।

 দৈহিক সুখভোগের লালসা সাধনার পথে বিঘ্ন উপস্থিত করিয়া থাকে; এই জন্য কৃচ্ছ্রসাধনা দ্বারা দেহকে নিপীড়িত করিবার অস্বাভাবিক উপায় অবলম্বন করা এক সময়ে ভারতবর্ষে প্রবল হইয়া পড়িয়াছিল। সিদ্ধার্থ মনে মনে সংকল্প করিলেন যে, কঠোর তপশ্চর্য্যা দ্বারা তিনি ইন্দ্রিয়গুলিকে দমন করিয়া নিজের মনকে বাসনামুক্ত করিবেন, এবং তাহা হইলেই তিনি দুঃখের হাত এড়াইয়া পরম শান্তি লাভ করিতে পারিবেন। তিনি বুঝিলেন যে, শাস্ত্র অধ্যয়ন বা শ্রবণ করিয়া সত্যলোক লাভ করা যায় না, একমাত্র সাধনার দ্বারা ইহা লাভ করা যাইতে পারে। সুতরাং অবিলম্বে তিনি অনুকুল ক্ষেত্রের সন্ধানে বাহির হইলেন। ভ্রমণ করিতে করিতে তিনি গয়াশীর্ষ শৈলের সমীপে উপস্থিত হইলেন। ইহার সন্নিকটে নৈরঞ্জনা ও মহানদী ফল্গুর সহিত মিশ্রিত হইয়াছে। কিয়দ্দূর অগ্রসর হইয়া উরবিল্ব গ্রামে প্রবেশ করিলেন। তথাকার নৈসর্গিক শোভা তাঁহার চিত্ত স্পর্শ করিল। স্বচ্ছসলিলা নৈরঞ্জনার

২১