পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৫১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

তথাপি নির্ব্বাণলোকের ত কোন সংবাদ পাইলাম না। আমার অবলম্বিত এই কৃচ্ছ্রসাধনার পন্থী কিছুতেই আর্য্যমাৰ্গ হইতে পারে না। অতএব এক্ষণে উপযুক্ত পানাহার দ্বারা দেহকে বলিষ্ঠ করিয়া মনকে অনুসন্ধানে নিযুক্ত করা কর্তব্য।”

 এইরূপ সিদ্ধান্তে উপস্থিত হইয়া তিনি নৈরঞ্জনার নির্ম্মল নীরে অবগাহন করিয়া স্নান করিলেন; তাঁহার শরীর এমন দুর্ব্বল হইয়া পড়িয়াছে যে, স্নানান্তে চেষ্টা করিয়াও নিজের শক্তিতে তীরে উঠিতে পারিতেছেন না। অবশেষে নদীবক্ষে অবনত একটি বৃক্ষশাখা ধরিয়া তিনি কূলে উঠিলেন।

 সিদ্ধার্থ আপন কুটীরের দিকে চলিলেন। পথিমধ্যে বনপথে তিনি সংজ্ঞাহীন হইয়া ভূতলে পড়িয়া গেলেন। পঞ্চ শিষ্য মনে করিলেন, সিদ্ধার্থের মৃত্যু ঘটিয়াছে। কৃচ্ছ্রসাধনার প্রতি সিদ্ধার্থ বীতশ্রদ্ধ হইয়াছেন বটে, কিন্তু তিনি কোন সাধনাপ্রণালী অবলম্বন করিবেন ভাবিয়া স্থির করিতে পারিতেছেন না। ভাবনার পর ভাবনার তরঙ্গ উঠিয়া সিদ্ধার্থের সংশয়াকুল চিত্ত দোলাইতে লাগিল। এই সময়ে তিনি একদিন নিদ্রিত অবস্থায় স্বপ্নে দেখিলেন –“দেবরাজ ইন্দ্র একটি ত্রিতন্ত্রী হস্তে লইয়া তাঁহার সম্মুখে উপস্থিত হইয়াছেন; উহার একটি তার অতি দৃঢ়রূপে বাঁধা ছিল। তাহাতে আঘাত করিবামাত্র শ্রুতিকটু বিকৃত স্বর বাহির হইল; অন্য একটি তার নিতান্ত শিথিল ছিল, উহা হইতে কোন সুরই নির্গত হইল না। মধ্যবর্ত্তী তারটি না-শিথিল না-দৃঢ় এমনই ভাবে যথাযথরূপে বাঁধা ছিল; সেই তারটিতে ঘা পড়িবামাত্র মধুর স্বরে চারিদিক পূর্ণ হইয়া উঠিল।”

২৪