পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৫২

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সাধনা ও বোধিলাভ

 নিদ্রাভঙ্গে সিদ্ধার্থের হৃদয় সত্যের বিমল জ্যোতির আবির্ভাবে পূর্ণ হইল। সাধনার উদার মধ্য পন্থা তাঁহার মনশ্চক্ষুতে প্রত্যক্ষ হইল। ভোগবিলাস ও কৃচ্ছ্রসাধনার মধ্যবর্ত্তী সত্যমার্গ অবলম্বন করিয়া তিনি বোধিলাভের জন্য স্থিরসংকল্প হইলেন।

 নিষ্ফল কঠোর সাধনায় স্বাস্থ্য ভগ্ন হইয়াছে বলিয়া সিদ্ধার্থ চিন্তিত হইলেন। তিনি বুঝিয়াছেন, বলিষ্ঠ দেহ এবং বলিষ্ঠ মন বোধিলাভের পক্ষে অনুকূল। দেহকে সবল করিয়া মনকে জাগ্রত করিয়া তিনি নবীন সাধনায় পুনর্ব্বার প্রবৃত্ত হইবেন, স্থির করিলেন। এই সংকল্পে উপস্থিত হইয়া তিনি একদিন শেষ রজনীতে সুস্নাত শুচি হইয়া একটি সুপরিষ্কৃত তরুমূলে ধ্যানে উপবিষ্ট হইলেন।

 সমীপবর্ত্তী সেনানিগ্রামে এক ধনবান বণিকের পুণ্যবতী দুহিতা সুজাতা বহু সাধনার ফলে একটি পুত্র লাভ করিয়া সুবর্ণ-পাত্রে পায়স লইয়া একদিন বনদেবতার পূজা দিতে আসিলেন। তাঁহার একটী দাসী অগ্রে অগ্রে আসিতেছিল। তরুমূলে উপবিষ্ট ক্ষীণাঙ্গ সিদ্ধার্থের ধ্যানসুন্দর মুখের অপূর্ব্ব জ্যোতিঃ দেখিয়া সে বিস্মিত হইল এবং দৌড়িয়া গিয়া সুজাতাকে জানাইল যে, দেবতা প্রসন্ন হইয়া তাঁহার ভক্তিঅর্ঘ্য গ্রহণ করিবার জন্য সশরীরে অবতীর্ণ হইয়াছেন। হৃষ্টচিত্ত সুজাতা দ্রুতপদে তরুমূলে উপস্থিত হইয়া শ্রদ্ধাবিকম্পিত করে দেবতার হস্তে পায়সান্নের পাত্র প্রদান করিলেন। “তোমার কামনা পূর্ণ হউক” বলিয়া সিদ্ধার্থ তাঁহার মহৎ দান গ্রহণ করিলেন। সুস্বাদ পায়সান্ন ভোজন করিয়া তাঁহার দুর্ব্বল দেহে বলের সঞ্চার হইল। তিনি

২৫