পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৬১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধের জীবন ও বাণী

এই শ্রদ্ধাশীল ও বিশ্বাসী পঞ্চশিষ্য একদিন গভীর ধর্ম্মক্ষুধা মিটাইবার জন্য তাঁহার আনুগত্য স্বীকার করিয়াছিল। কিন্তু সে সময়ে বুদ্ধের অন্তরের অন্তরতম গোপন ভাণ্ডার অমৃতান্নে পূর্ণ হইয়া উঠে নাই; তিনি তখন তাঁহাদিগকে ক্ষুধায় অন্নদান করিতে পারেন নাই। কিন্তু এখন তাঁহার ভাণ্ডারে যে অমৃত সঞ্চিত হইয়া উঠিয়াছে, তাহা দ্বারা পঞ্চশিষ্য কেন, সমগ্র নরনারী তৃপ্তিলাভ করিতে পারেন। যাঁহারা একদিন বিমুখ হইয়া তাঁহাকে পরিত্যাগ করিয়া গিয়াছিলেন, তিনি আর কাল বিলম্ব না করিয়া তাঁহাদের সন্ধানে মৃগদাব বা ঋষিপত্তনের অভিমুখে ছুটলেন।

 বুদ্ধের আগমনবার্ত্তা পূর্ব্বেই শিষ্যদের কর্ণগোচর হইয়ছিল। তাহারা কিছুতেই বুঝিতে পারেন নাই যে, সিদ্ধার্থ সাধনায় সিদ্ধি লাভ করিয়া বুদ্ধ হইয়াছেন। তাঁহাদের প্রতীতি হইল, তিনি তপোভ্রষ্ট হইয়া আসিতেছেন। মনে মনে স্থির করিয়া রাখিলেন সিদ্ধার্থকে তাঁহারা কদাচ গুরু বলিয়া শ্রদ্ধা দেখাইবেন না; কার্য্যতঃ কিন্তু উল্টা ব্যাপার দাঁড়াইল। বুদ্ধদেবের প্রসন্নমুখের দিব্য জ্যোতিঃ দেখিবামাত্র তাঁহাদের সকল সংশয় দূর হইল এবং মন শ্রদ্ধায় অবনত হইয়া পড়িল। তিনি তাহাদের সম্মুখে উপস্থিত হইবামাত্র তাঁহারা আসন ত্যাগ করিয়া তাঁহার চরণ বন্দনা করিলেন।

 বুদ্ধ কহিলেন—“প্রিয় শিষ্যগণ, কৃচ্ছ্রসাধনা ও ভোগবিলাসের আতিশয্য এই দুইয়ের মধ্যবর্ত্তী কল্যাণময় মুক্তিবর্ত্ম আমি আবিষ্কার করিয়াছি। সেই নির্ব্বাণ লাভ করিবার উপায় আমি তোমাদিগকে দেখাইয়া দিব।” বুদ্ধদেবের তেজোময়ী বাণী শ্রবণ করিয়া শিষ্যদের

৩২