পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৬৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
বুদ্ধ ও তাঁহার পঞ্চ শিষ্য

আরোহণ করিলেন। শ্রদ্ধানম্র শিষ্যেরা তাঁহাদের হৃদয়পাত্রের মুখ উন্মোচন করিয়া নিঃশব্দে গুরুর সম্মুখে ধারণ করিলেন। তিনি তাঁহার সত্যধর্ম্মের রসধারা বর্ষণ করিতে লাগিলেন।

 শিষ্যেরা হৃদয় দিয়া বুঝিলেন যে, এই সত্যধর্ম্মের আদিতে কল্যাণ, অন্তে কল্যাণ। গুরুর উপদেশে তাঁহাদের চিত্তের সমস্ত সংশয় দুর হইবামাত্র তাঁহারা (১) জগতে দুঃখের অস্তিত্ব, (২) দুঃখের উৎপত্তির কারণ (৩) দুঃখ-অতিক্রমের পন্থা এবং (৪) দুঃখ-নিবৃত্তির উপায়, এই চতুরার্য্য সত্যের সুস্পষ্ট উপলব্ধি করিলেন; অর্থাৎ তাঁহারা বুঝিলেন, জগতে সুখ দুঃখ আছে ইহা সত্য, দুঃখ-উদ্ভবের কারণ রহিয়াছে ইহা সত্য, দুঃখ হইতে মুক্তি লাভ করা যায় ইহা সত্য এবং দুঃখ দূর করিবার উপায় আছে, ইহাও সত্য। এই দুঃখ দূর করিবার জন্য,—(১) সম্যক্‌-দৃষ্টি (২) সম্যক্‌-সঙ্কল্প (৩) সম্যক্‌-বাক্‌ (৪) সম্যক্-কর্ম্মান্ত (৫) সম্যগাজীব (৬) সম্যক্‌-ব্যায়াম (৭) সম্যক্-স্মৃতি (৮) সম্যক্‌-সমাধি, আষ্টাঙ্গিক সাধনা আবশ্যক।

 শিষ্যেরা বুঝিলেন দুঃখের নির্ব্বাণ করিয়া পরমানন্দ পরমশান্তি লাভ করিতে হইলে যে সাধনা গ্রহণ করিতে হয়, তাহা প্রাণহীন বাহ্য অনুষ্ঠান নহে, সেই সাধনা গ্রহণ করিতে হইলে, সেই সাধনায় সিদ্ধিলাভ করিতে হইলে, দৃষ্টি, সঙ্কল্প, বাক্য, কর্ম্ম, জীবিকা, ব্যায়াম, স্মৃতি, ধ্যান পবিত্র করিতে হইবে।

 বিস্মিত আনন্দে বিনিদ্র শিষ্যগণ সমস্ত রজনী সমস্ত হৃদয় মন দিয়া গুরুর মুখে নবধর্ম্মের অমৃতময়ী বাণী শ্রবণ করিলেন। অরুণোদয়ে আবার সুস্নাত শুচি হইয়া গুরুর সহিত ঋষিপত্তনে

৩৫