পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৭৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

বুদ্ধের জীবন ও বাণী

করিবার উপক্রম করিয়াছেন।” তাঁহারা বৌদ্ধভিক্ষুদিগকে বিদ্রূপস্বরে কহিলেন—“তোমাদের প্রভু যুবকদিগকে যাদুমন্ত্রে বশ করিতেছেন, এক্ষণে কাহার উপরে তাঁহার দৃষ্টি পড়িয়াছে, তিনি সংপ্রতি কাহাকে যাদু করিয়া ঘরের বাহির করিবার ষড়যন্ত্র করিয়াছেন?” এইসব উক্তি শ্রবণ করিয়া বুদ্ধদেব বলিলেন—”তোমরা চিন্তিত হইও না, এই অসন্তোষ দীর্ঘকাল-স্থায়ী হইতে পারে না, তোমরা বিদ্রূপকারীদের ধীরভাবে বলিও, বুদ্ধদেব লোককে সত্যপথে আহ্বান করিয়া থাকেন, তিনি সংযম, ধর্ম্মনিষ্ঠা ও পরিত্রাণই প্রচার করিয়া থাকেন।”

 এই সময়ে সুদত্তনামক এক সত্যানুরাগী ধনবান ব্যক্তি মহাপুরুষ বুদ্ধের সুযশ শ্রবণ করিয়া তাঁহার দর্শনলালসায় রাজগৃহে আগমন করেন। অমিত ঐশ্বর্য্যের অধিকারী এই পুণ্যশীল ব্যক্তির নিবাস কোশলরাজের রাজধানী শ্রাবস্তীনগর। তিনি দরিদ্রের বন্ধু, নিরাশ্রয়ের শরণ ছিলেন। অনাথের অন্নদাতা বলিয়া তিনি অনাথপিণ্ডদ নামে অভিহিত হইতেন। বুদ্ধদেব এই সাধুশীল ধনীর হৃদয়ের শোভনতার পরিচয় পাইয়া তাঁহাকে মধুর ধর্ম্মলাপে পরিতৃপ্ত করিলেন। বুদ্ধের হৃদয়স্পর্শী উপদেশ শুনিয়া অনাথপিণ্ডদ বিমুগ্ধ হইলেন; তিনি অকপটচিত্তে তাঁহাকে বলিলেন—“প্রভূত সম্পদের অধিকারী বলিয়া আমার মন সর্ব্বদা চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকে, তথাপি কর্ম্ম করিয়া আমি আনন্দ পাইয়া থাকি, অলসভাবে সর্ব্বদা আপনাকে নানাকর্ম্মে ব্যাপৃত রাখিয়া থাকি। বহুব্যক্তি আমার আশ্রয়ে কার্য্য করে এবং আমার সফলতার উপরে তাহাদের ভাগ্য নির্ভর করিয়া থাকে।”

৪২