পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৭৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
নবধর্ম্মের প্রচার ও ব্যাপ্তি

 “হে দেব! আপনার শিষ্যেরা গৃহত্যাগী সাধুজীবনের শান্তির প্রশংসা এবং সাংসারিক জীবনের অশান্তির নিন্দা করিয়া থাকেন। তাঁহারা বলেন, আপনি সর্ব্ববিধ সম্পদ্‌ ত্যাগ করিয়া ধর্ম্মরাজ্যের প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন এবং বিশ্ববাসীকে নির্ব্বাণলাভের দৃষ্টান্ত দেখাইয়াছেন।

 “প্রভো! মঙ্গলকর্ম্মে নিযুক্ত থাকিয়াও আমি লোক সেবার জন্য ব্যাকুলতা অনুভব করিয়া থাকি। এক্ষণে আমার জিজ্ঞাস্য এই যে, শ্রেয়োলাভের নিমিত্ত আমাকে কি ধন সম্পদ্‌ গৃহ ও ব্যবসায়-বাণিজ্য ত্যাগ করিয়া উদাসীন হইতে হইবে?” বুদ্ধ উত্তর করিলেন—“যিনি আর্য্যমার্গ অবলম্বন করিবেন, তিনিই শান্তি লাভ করিতে পরিবেন। ঐশ্বর্য্যের উন্মাদন যাঁহার চিত্ত অভিভূত করে, তাঁহার পক্ষে উক্ত বর্জ্জন করাই শ্রেয়; কিন্তু ধনের প্রতি যাঁহার আসক্তি নাই, যিনি অকুণ্ঠিতচিত্তে আপনার সম্পদ্‌ লোককল্যাণে ব্যয় করিতে পারেন, তাঁহার সম্পত্তি পরিত্যাগ করার কোন আবশ্যকতা নাই।”

 “আমি তোমাকে কহিতেছি তুমি সগৌরবে নিজ পদে প্রতিষ্ঠিত থাকিয়া আপনার শক্তি ব্যবসায়-বাণিজ্যের শ্রীবৃদ্ধিসাধনে প্রয়োগ কর। আমার ধর্ম্ম কাহাকেও অকারণে গৃহহীন হইতে বলে না। আমার ধর্ম্ম অহঙ্কার, মলিনতা ও ভোগবিলাস বর্জ্জন করিয়া সাধুপথে বিচরণ করিবার জন্য মানবকে আহ্বান করিয়া থাকে।”

 “অনিকেতন ভিক্ষুও যদি নিরুদ্যম, নিবীর্য্য, অলস ও বিলাসপ্রিয় হইয়া উঠেন, তাহা হইলে তিনিও কদাচ শ্রেয়োলাভ করিতে পারেন না।”

৪৩