পাতা:বুদ্ধের জীবন ও বাণী.djvu/৭৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

বুদ্ধের জীবন ও বাণী

রহিলেন। স্বামীর শ্রীমুখ-নিঃসৃত মধুর ধর্ম্মোপদেশে গোপা তাঁহার অনাবৃত হৃদয়পাত্র পূর্ণ করিয়া লইলেন। গভীর সান্ত্বনা লাভ করিয়া তিনি তাঁহার স্বামীর ধর্ম্মের আশ্রয় গ্রহণ করিলেন।

 কপিলবাস্তু নগরের বহুসংখ্যক ব্যক্তি এই সময়ে বুদ্ধের ধর্ম্ম- গ্রহণ করিয়াছিলেন। ইহাদের মধ্যে বুদ্ধের বিমাতা প্রজাবতী। গৌতমীর পুত্র নন্দ, তাঁহার পিতৃব্যপুত্র দেবদত্ত, ক্ষৌরকার উপালি, দার্শনিক অনুরুদ্ধ এবং উপস্থায়ক আনন্দ ইতিহাসে সমধিক প্রসিদ্ধ।

 “মনের মানুষ” বলিলে যাহা বুঝায়, আনন্দ বুদ্ধদেবের ঠিক তাহাই ছিলেন। আনন্দ যেমন সহজ অন্তরঙ্গতার সহিত বুদ্ধের উপদেশ গ্রহণ করিতে পারিতেন, আর কেহ তেমন পারিতেন না। তাঁহার মন, শ্রদ্ধা ও বিনয়ে অবনত ছিল। তিনি বুদ্ধের জীবনের শেষমূহূর্ত্ত-পর্য্যন্ত নিরন্তর ছায়ার ন্যায় অনুগমন করিয়া মনে-প্রাণে তাঁহার সেবা করিয়াছিলেন।

 কপিলবাস্তু নগরে বুদ্ধ একদিন প্রাসাদের অদূরবর্ত্তী কোনো একস্থানে ভোজনে বসিয়াছিলেন; গোপী তাঁহার কক্ষের বাতায়ন হইতে বুদ্ধকে দেখিতে পাইয়া সপ্তমবর্ষীয় পুত্র রাহুলকে রাজবেশে বিভূষিত করিলেন এবং তাহাকে কহিলেন ‘বৎস, ঐ যে সৌম্যমূর্ত্তি সাধু আহার করিতেছেন, তিনিই তোমার পিতা, ঐ সাধু চারিটি রত্নের খনি আবিষ্কার করিয়াছেন, তুমি তাঁহার নিকটে গমন করিয়া পিতৃধন অধিকার কর।”

 মাতার নির্দেশানুসারে রাহুল বুদ্ধের নিকট গমন করিয়া পিতৃসম্পৎ-প্রাপ্তির প্রার্থনা জানাইল। বুদ্ধ বলিলেন—“পুত্র, পার্থিব ধন রত্ন আমার কিছুই নাই, তুমি যদি ধর্ম্মধন-লাভের জন্য

৪৮