পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Weybro বৃহৎ বঙ্গ এই পত্ৰ পড়িয়া কায়কোবাদ নিতান্ত বিচলিত হইয়া পড়িলেন । তিনি লোকজন না। লইয়া একাকী তখনই তঁহার পিতৃসকাশে ছুটিয়া যাইতে ইচ্ছা প্ৰকাশ করিলেন। কিন্তু কূটনীতিজ্ঞ মন্ত্রী তাহার স্নেহের আধিক্য কমাইয়া দিলেন এবং বুঝাইলেন, তিনি সমস্ত হিন্দুস্থানের সাহেন সা সম্রাট, তাহার পক্ষে নিম্নস্থ এক রাজার কাছে-হউন না কেন তিনি পিতা-এভাবে যাইয়া প্ৰথমে সাক্ষাৎ করা তাহার পদোচিত মৰ্য্যাদার যোগ্য হইবে না । শেষে এই স্থির হইল যে, দুই পক্ষের সৈন্যের মধ্যস্থলে কোন স্থানে বঙ্গেশ্বর সিংহাসনারূঢ় সম্রাটুকে সমুচিত সম্মান প্ৰদৰ্শন করিবেন। জ্যোতিষীরা শুভ দিন-ক্ষণ নির্দিষ্ট করিয়া দিল এবং সমস্ত ব্যবস্থাই ঠিক হইল। সম্রাট বহু আডম্বরেব সঙ্গে সৈন্যসামন্তের ঘটা করিয়া দেহরক্ষিপরিবেষ্টিত হাঁটুয়া শিবিরে প্রবেশ করিলেন, তৎপরে পিতা সবযুমুদী পার হইযা পুত্ৰেব সাক্ষাতে উপস্থিত হইলেন। যখন তিনি সিংহাসন প্ৰথম দেখিতে পাইলেন, তখন একবাব কুনিস করিয়া অভিবাদন করিলেন, আরো একটু অগ্রসর হইয়া দ্বিতীয়বাব কুর্নিস ও অভিবাদন কবিলেন এবং যখন একেবাবে সিংহাসনের পাদদেশে আসিয়া পন্ডিলেন, তখন তৃতীয়বার কুনিস করিতে উদ্যত হইলেন । পিতার এই হীনতা ও দৈন্য দেখিয়া, পুত্র • আর সাহা করিতে পাবিলেন না। তিনি উচ্চৈঃস্বরে কঁাদি যা পিতার বক্ষে কঁপাইয়া পড়িয়া অনেকক্ষণ পৰ্য্যন্ত আলিঙ্গনবদ্ধ হইয়া রহিলেন । এই করুণ দৃশ্যের পরে পিতা পুল্লেব হাত ধবিয়া সিংহাসনে বসাইয়া দিতে চেষ্টা করিলেন । কিন্তু সম্রাট সেখানে বসিতে কিছুতেই স্বীকৃতি হইলেন না। পিতাকে সিংহাসনে বসিতে বাধ্য কবিলেন এবং নিজে অতি সম্রামেব সহিত সিংহাসনের নিম্নে একটি স্থানে উপবেশন করিলেন । এই ঘটনাব্য রাজ্যোিব হিতাকাংক্ষী সকলেই বিশেষ প্রীত হইলেন। কয়েক দিন পৰ্যন্ত খুব আনন্দোৎসব চলিল, বাজি ও আলোর ঘটায় আকাশ প্ৰদীপ্ত হইল এবং রাজার সঙ্গে প্ৰধান প্ৰধান আমীরগণ দেখা সাক্ষাৎ করিযী মহাসুখে সময কাটাইলেন । ইহাব পাব উভয পক্ষের সন্ধি হুওয়ার কোন বাধাই রহিল না” নাসিরুদিন বঙ্গ ও পার্শ্ববৰ্ত্তী অঞ্চলগুলির স্বাধীন নৃপতি হইলেন, কিন্তু দিল্লীর কোন কাৰ্য্যে হস্তক্ষেপ করিতে পরিবেন না। এই সর্ত হইল।। ১২৮৮ খৃঃ এই সকল ঘটনা ঘটিয়াছিল । বিদায়ের সময়ে নাসিরুদিন পুত্রকে অনেক হিতোপদেশ দিলেন এবং প্রধান মন্ত্রীকে অবিলম্বে বিদায্য কবিয দিতে অনুবোধ করিলেন । পবিত্সৰ্পর আলিঙ্গনাদির পব অতি স্নেহের সহিত বিদায়ের উপসংহাৰ হইল। পিতাপুত্ৰ স্বীয় স্বীয় রাজধানীতে প্ৰত্যাবর্তন কবিলেন। এই ঘটনার পাব নাসিরুদিন অত্যন্ত বিচলিত হইলেন । তিনি প্ৰায়ই দুঃখ প্ৰকাশ করিযী বন্ধুদিগকে বলিতেন—হিন্দুস্থানের সাম্রাজ্য ও তাহার পুত্র উভয়ই তিনি শীঘ্ৰ হারাইবেন । তিনি যাহা ভয় করিয়াছিলেন তাহাই হইল, কারণ এক বৎসর পরে ১২৮৯ খৃঃ কায়কোবাদ খিলিজিবংশীয় এক আমীর কর্তৃক গোপনে নিহত হইলেন । ফিরোজসাহা খিলিজি ১২৮৯ খৃষ্টাব্দে সম্রাটু হইয়া নাসিরুদ্দিনকে বঙ্গের মসনদে বহাল পিতাপুত্রের মিলন ०२” श्रृंः ।