পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈতন্যের তিরোধান ও বৈষ্ণব সমাজ ANOS চুলের রাশি হাতে লইয়া মুগ্ধ চােখে চাহিয়া থাকিতেন, এবং ময়ুর-ময়ূরীর কণ্ঠের উজ্জ্বল নীলাভ কৃষ্ণবর্ণ দেখিয়া উন্মত্ত হইতেন। কালে রঙ্গের বিগ্ৰহ সম্মুখ হইতে অপসারিত হওয়ায় সেই বর্ণ আরও প্রিয় এবং ধ্যানের বস্তু হইয়া দাড়াইয়াছিল ; এজন্যই মাধবেন্দ্ৰ পুরী মেঘদর্শনে অজ্ঞান হইতেন এবং চৈতন্য দেব দাক্ষিণাত্যে চণ্ডপুর গ্রামে এক তমালতীরু দেখিয়া তাহাকে সাশ্রনেত্ৰে নিবিড় আলিঙ্গনে আবদ্ধ কবিয়াছিলেন-কখনও যে-কোনও নদীকে কালিন্দী মনে করিয়া তাহাতে বাপ দিয়া পড়িতেন। এক পদকর্তা রাধিকার সম্বন্ধে লিখিয়াছেন-“বিজনে আলিঙ্গয়ে তরুণ তমাল।” এবং বহু বৈষ্ণব কবি রাধার মৃত্যুকালীন ইচ্ছা-মরণান্তে তমাল-ডালে তাহার তনু বাধিয়া রাখিবার কথা লিপিবদ্ধ করিয়াছেন । ভগবদ্যারাধনায় এই কৃষ্ণবর্ণটি ক্রমশঃ একটি স্মারক চিহ্নস্বরূপ হইয়া বৈষ্ণব কবিতায় এক অপূর্ব উন্মাদনার অমৃত ঢালিয়া দিয়াছিল। এই কালো বৰ্ণ বৈষ্ণবের চক্ষে ধ্যানিলোকের বস্তু হইয়া দাড়াইয়াছিল এবং র্যাহাকে মন্দির হইতে দূর করিয়া দেওয়া হইল, সেই বিগ্ৰহ স্থান লইলেন ভক্তের চক্ষে ও মনে-বিশ্বের সর্বত্ৰ-সমুদ্রের নীললহরীতে, সুশ্যাম তমালতরুতে, কৃষ্ণবৰ্ণ মেঘে ও ময়ুর-ময়ূরীর কণ্ঠের বর্ণে। কবিরা এখনও গান বাধিয়া বলেন, “কালো কি হয় না ভালো-রে” চৈতন্যের মুহুমুহুঃ মূৰ্ছা এবং ভগবানের সঙ্গে আনন্দমিলন অনেক সময়ে এই কৃষ্ণবৰ্ণকে কালোর উপরে দরদ । সমাশ্রয় করিয়া হইত। কৃষ্ণের বর্ণ অবশ্যই কালো, কিন্তু iTeDDBLuuB DuuDB DDBDD Y0LLD qLLB DDD DuDDuDBDD মত আমার কেহ দেখায় নাই। নষ্ট পরিচ্ছেদ চৈতন্যের তিরোধান ও বৈষ্ণব সমাজ ১৫৩৩ অব্দে চৈতন্যের তিরোধান হয়। এই তিরোধান কিরূপে হইয়াছিল, তাহা এখনও স্থির হয় নাই। তিনি সমুদ্রে বঁাপাইয়া পড়িয়াছিলেন, একথা চৈতন্যচরিতামৃতে লিপিবদ্ধ আছে, এই সূত্রে সমুদ্রের জলে তঁহার তিরোধান হয়-এই যে "*" সংস্কার কয়েকজন শিক্ষিত লেখক সৃষ্টি করিয়াছেন, তাহাতে কোন আস্থা দেওয়া যায় না। প্রাচীন সাহিত্যের কোথায়ও ইহার প্রমাণ নাই। স্থানীয় প্রবাদ, তিনি জগন্নাথের সঙ্গে অথবা গোপীনাথের সঙ্গে মিশিয়া গিয়াছিলেন—তাহার দেহ ছিল চিন্ময়, সুতরাং রক্তমাংসের দেহের ধ্বংসের মত তাহার বিলয় হইতে পারে না, এই সংস্কারবশতঃ প্ৰবাদটির সৃষ্টি হইয়াছিল। কোন একটি প্রাচীন পদে “মহাপ্ৰভু হাৱাইলাম গোপীনাথের ঘরে” এই ছত্রটি আছে। ইহা গোপীনাথের সঙ্গে তাহার মিশিয়া