পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ANVy" বৃহৎ বঙ্গ করিলেন। চৈতন্তের “না খাইয়া অস্থিচৰ্ম্ম হইয়াছে সার”, “নিরবধি দাস্তপ্রেমে প্রভুর বিহার, মুই কৃষ্ণদাস বই না বলায় আর । হেন কার শক্তি নাই সন্মুখে তাহানে। ঈশ্বর করিয়া বলিবেক দাস বিনে” (চৈ, ভা, অন্ত্য ১০ ), “ত্রিরাত্ৰ চলিয়া গোল বৃক্ষের তলায়। অনাহারে উপবাসে কিছু নাহি খায়। বহিছে হৃদয়ে দরদর অশ্রদ্ধারা। শত ডাকে কথা নাই পাগলের পারা।” “ছিন্ন এক বহির্বাস পাগলের বেশ” (করাচা ) “ধূলামাখা জটাবাধা অন্য কথা নাই। পথে কৃষ্ণ কৃষ্ণ বলি চলিছে নিমাই।” “অনাহারে শীর্ণদেহ চলিতে না পারে। তবু প্ৰভু হরি নাম দেন। ঘরে ঘরে।” ( করাচা ) এই প্ৰেমাদ্র চৈতন্য-মূৰ্ত্তি আর বৈষ্ণব-সমাজে নাই। কৃষ্ণনগরের কুমারেরা তাহার যে মূৰ্ত্তি প্ৰস্তুত করে, তাহাতে চৈতন্যদেব গোসাইদের মত নধরকান্তি, ভুড়িটি অগ্রগণ্য, তৈলে ঘুতে মাখনে পুষ্ট দেহ। গোস্বামিগণ এই ভাবে নিজের অংশ-অবতাররূপে লোকবিশ্বাসে স্থান অধিকার করিয়া বৈষ্ণব८ ७2थंक्षन् श्र দৈন্য ও আত্তি হইতে বিচ্যুত হইলেন। চৈতন্যদেব রঘুনাথ দাসকে শিক্ষা দিয়াছিলেন-“ভাল না খাইবে আর ভাল না পরিবে ।”-তঁাহাকে তরুর মত হইতে বলিয়াছিলেন-তরুণ ঝড়বৃষ্টি রৌদ্র বিদ্যুৎ স্বয়ং মাথা পাতিয়া লয়-কিন্তু পরকে ছায়া দান করে, যে কুঠারাঘাতে তাহাকে কৰ্ত্তন করে, তাহাকেও স্বীয় অমৃতফল ও সুগন্ধ পুষ্প প্ৰদান করে ; ক্ষুধাতৃষ্ণায় মরিয়া গেলেও কাহারও কাছে কিছু প্রার্থনা করে না। নিজকে রিক্ত করিয়া তাহার তপস্যার্জিত পুণ্যফল-পুস্পরস ও ফল অপরকে বিনামূল্যে প্ৰদান করে। জগতে তরুর মত সহিষ্ণুতার আদর্শ, দৈন্তের, দানের, অযাচক বৃত্তির আদর্শ-আর কোথায় আছে ? এইজন্য চৈতন্য রঘুনাথ দাসকে তরুর মত হইতে বলিয়াছিলেন। চৈতন্যচরিতামৃতকার তরুর গুণ ব্যাখ্যা করিয়া টিপ্পানী করিয়াছেন। এই জগতে নিত্য ধ্বংসলীলা চলিতেছে, প্ৰস্ফুট ফুল শুকাইয়া ঝরিয়া পড়িতেছে, কত পল্লব, কত পত্র, কত সৌন্দৰ্য্য, কত সুরভির ধ্বংসের মধ্যে জগৎ প্রতিদিন জাগ্ৰাৎ হইতেছে, তথাপি এই ধ্বংসলীলার মধ্যে পরমানন্দ । সেই আনন্দময়ের वशeडू प्रैत्र डिब्र° হাসির বিরাম নাই। নিত্য বিহঙ্গের আগমনী গান, নিত্য নবকুসুমबाथ । محي m সম্ভার, নিত্য নিবারের কুলুকুলু, উষার সুবেশ ; এই অস্থায়ী চিরাচঞ্চল জগতের মধ্যে চিরস্থায়ী আনন্দের রূপ আছে--সেই রূপ-সমুদ্রে অবগাহন করিলে মানুষ আনন্দনিকেতনে পৌছিতে পারে-“আনন্দং ব্ৰহ্মণে বেত্তি ন বিভেতি কদাচন।” চৈতন্য সেই আনন্দময়ের দেখা পাইয়াছিলেন। বৈষ্ণব ধৰ্ম্ম-আনন্দের ধৰ্ম্ম, বৌদ্ধধৰ্ম্ম দুঃখের ধৰ্ম্ম। সেই আনন্দময় পুরুষবরকে দেখিতে দেখিতে মুগ্ধ আত্মা নিজসত্তা ভুলিয়া আনন্দসাগরে ডুবিয়া যায়, যেমন নদী সমুদ্রে পড়িয়া নিজকে হারাইয়া ফেলে—‘এই অবস্থার নাম “বিশিষ্ট দ্বৈতাদ্বৈতবাদ,” এই অবস্থা বর্ণনা করিতে যাইয়া জয়দেব বলিয়াছেন।-- মুহুরবলোকিতমগুনলীলা মধুরিপুরাহমিতি ভাবনশীল” ভাগবতও তাহার আভাস দিয়াছেন। চৈতন্যদেব ভগবানের সেই অপূৰ্ব্ব হলাদিনী শক্তির প্রকাশস্বরূপ। তিনি শুধু তােহর ভগবদভক্তিপ্রবুদ্ধ, অপাপবিদ্ধ, সুনিৰ্ম্মল মূৰ্ত্তি দেখাইয়া সৰ্ব্বলোককে পাগল করেন নাই, তাহার প্ৰেমে