পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৃহৎ বঙ্গ \مه দ্বিতীয় পৰিৱচ্ছেদ दठ्ठ्लीव्र বিদ্রোহিগণ কিন্তু পাঠান নবাব ও তঁাহাব বংশধবেবাই শুধু মোগল সমাটের বিদ্রোহিত কবে নাই । বঙ্গদেশ পাঠানযুগে একরূপ স্বাধীন ছিল বাঙ্গলার নৃপতিরা কেহ বা শুধু মুখে, কেহ বা ff에 8 35 | rifft, বাদশাহেব বশ্যতা জানাইলে-তাহারা স্বাধীন থাকিতেন । তঁাহাবা নিজেব নিজের রাজ্যে দণ্ডমুণ্ডের কৰ্ত্তা থাকিতেন । পাঠান আমলে বঙ্গের সিংহাসন লইয়া পরস্পবেবি মধ্যে যেরূপ হত্যাকাণ্ড ও কাড়াকডি চলিয়াছিল, তাতাতে দেশটা অনেক পরিমাণে হিন্দুর হাতেই পড়িয়াছিল। অবশ্য এক এক সমযে রাষ্ট্রবিপ্লবের ঝড় দেশে বই যা৷ যাইত, তখন দেব-মন্দির ও বিগ্ৰহ ভাঙ্গার ধর্ম পড়িযা যাইত, এবং যাহারা ঝডের মুখে পডিত, তাহারা মারিত। কিন্তু মোগল সম্রাট সমস্ত দেশটি আত্মসাৎ করিতে চাহিলেন, তোদরমল্লকে পাঠাইযা সমস্ত দেশে জরিপ করিয়া বাজিস্বেব হার স্থিব করিয়া দিলেন, পাঠানদেব ও অনেক হিন্দুর জায়গীব বাজেয়াপ্ত করিলেন, এমন কি পাঠানদের হাত হইতে যে সকল জায়গীর দখল করিষা মোগলদিগকে দিলেন, তঁহাদিগকে তাহা নিকদ্বেগে ভোগ কবিতে দিলেন না,- তাহাদিগকে রীতিমত রাজস্ব দিতে হইত এবং অন্যান্য কঠোর নিয়মের বশবৰ্ত্তী হইয়া সেই জায়গীর ভোগ করিতে হইত। কোথায় জঙ্গলবাড়ীতে ক্ষুদ্র ভৌমিক ইশা খা, শ্ৰীপুরে কেন্দাব বায়, যশোহবে প্রতাপাদিত্য--কে কি কৰিতেছে, আকবব তাহার সন্ধান লইতেন । পাঠান শক্তি প্ৰবল ঝড়ের ন্যায় উচ্চ বৃক্ষগুলি ভাঙ্গিয়া চলিত, কিন্তু মোগল সম্রাটের চক্ষুতে যেরূপ পাহাড়-পৰ্ব্বত পন্ডিত, দূৰ্বাঘাস ও তৃণগুলিও সেইৰূপ তাহার শ্যেন-দৃষ্টি এড়াইত না । পাঠান রাজাদের দৃষ্টি ছিল ক্ষুদ্র বাঙ্গলাব মসনদেব উপর, দিল্লীশ্বরগণের অনেকেই দুর্বল ছিলেন, সুতীয়াং বাঙ্গলার বাদশাহের ক্ষমতা তঁাহাবা প্রায়ই লোপ কবিতেন না। কিন্তু এবাব বাঙ্গলায্য প্রকৃত স্বাধীনতার সমব আরম্ভ হইল। বৃহত্তব বাঙ্গলাব সঙ্গে দিল্লীব লড়াই নূতন কথা নহে। চিরকাল বাঙ্গলাদেশ দিল্লীর প্রতিদ্বন্দিতা কবিয়া আসিযাছে । সেই ইতিহাস-পূৰ্ব্বযুগে জরাসন্ধ, পৌণ্ড, বাসুদেব, ভগদত্ত, বাণ, মুর, নবাক প্রভৃতির সময় হইতে বাঙ্গলাদেশ দিল্লীর সমাটের সার্বভৌমত্ব সহ করিতে পারে নাই । নন্দ বংশের সময় হইতে বৃহত্তর বাঙ্গলা জয়ী হইল-ইন্দ্ৰপ্ৰস্থ আড়ালে পড়িল। যুগ যুগ ধবিয়া মগধ ভারতবর্ষেব শীর্ষস্থান অধিকার কবিয়া রহিল। তারপর গুপ্তগণ পূৰ্ব্বাঞ্চলের সমুদ্ধি নানাদিকে বাড়াইয়া দিলেন, গুপ্তদের শেষকালে রাজলক্ষ্মী মগধ ছাড়িয়া খাস গৌডে আসিলেন । পালের খাস বাঙ্গলার বাজা । তখন ইন্দ্ৰপ্ৰস্থ নিবিয়া গিয়াছে, তথাপি পশ্চিমভারতের সহিত বাঙ্গলার বিরোধ থামে নাই, বঙ্গরাজকে প্রতারণা করিয়া কাশ্মীরাধিপতি নিধন করিলেন, বঙ্গসৈন্য পরিহাস-কেশবের মন্দির ভাঙ্গিবার জন্য যে অদম্য সাহস ও আত্মোৎসর্গ দেখাইয়াছিল তাহা কলহণ কবি নানা উপমাখচিত করিয়া স্বর্ণীক্ষরে লিখিয়া রাখিয়াছিলেন।