পাতা:বৃহৎ বঙ্গ (দ্বিতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

दछडाझ Gियछिis s রামায়ণে ইহার উল্লেখ নাই। বুদ্ধের ভিক্ষুধৰ্ম্ম গ্রহণ ও ত্যাগের আদর্শে ষে বৌদ্ধরাজগণ ইহার অনুসরণ করিতেন, তাহাই অধিকতর সম্ভব বলিয়া মনে হয়। বঙ্গদেশে ত্রিপুরা রাজ্যে সেদিন পৰ্য্যন্ত এ প্ৰথা নামে মাত্র অনুষ্ঠিত হইত। রাজা কল্পতরু হওয়ার পর মহারাণী সর্বপ্রথম র্তাহার রাজত্ব ও সর্বস্ব চাহিয়া লইতেন। প্ৰতাপাদিত্য সিংহাসনে বসিয়া কল্পতরুব্ৰত সঙ্কল্প করিয়াছিলেন। তিনি কোন গুরুতর ব্যাপার লইয়া ছিনিমিনি খেলার লোক ছিলেন না। ব্ৰাহ্মণ শরৎকুমারীকে পাইলেন, শরৎকুমারীও রাজার ধৰ্ম্মকাৰ্য্যে বাধা দিলেন না। এইস্থানে শরৎকুমারী ব্ৰাহ্মণের বাড়ীতে দাসীর বৃত্তি করিবেন---এই পৰ্য্যন্ত, কিন্তু গ্ৰহীতা পরস্ত্রীর উপর হস্তক্ষেপ করিবার ক্ষমতা কখনই পান নাই । কিন্তু ব্ৰাহ্মণ রাজাকে জানাইলেন, তিনি শুধু রাজার দানবল পরীক্ষা করিবার জন্য এইভাবে রাণীমাকে যান্ত্রিা করিয়াছিলেন ; তিনি তঁাহাকে বিধিমত প্ৰত্যাৰ্পণ করিলেন এবং বিনিময়ে রাজ্ঞীর ওজনমত স্বর্ণ পাইলেন । প্রতাপাদিত্যের শাসনপ্ৰণালী উৎকৃষ্ট ছিল। প্ৰবল পরাক্রান্ত রাজা রাজ্যের এরূপ সুশৃঙ্খলা করিয়াছিলেন যে সকলে রামরাজ্যে বাস করিত। র্তাহার অপূৰ্ব্ব দানশক্তি ও উদারতাসম্বন্ধে অনেক প্ৰবাদ প্রচলিত আছে, —রামরাম বসু ও সতীশ মিত্ৰ মহাশয়ের পুস্তকে তাহা বিস্তারিতভাবে উল্লিখিত হইয়াছে। তিনি দুৰ্দান্ত পর্তুগীজ জলদস্যগণকে নিরস্ত করিয়াছিলেন, এবং তাহার রাজ্যের লোকেরা বহিঃশত্রুর আক্ৰমণসম্বন্ধে নিশ্চিন্ত ছিল । তঁহার পিতা বিক্রমাদিত্য ও পিতৃব্য বসন্ত রায়ের সময় হইতে ব্ৰাহ্মণ, কায়স্থ-কুলীন এবং পণ্ডিতগণ যশোরে আমন্ত্রিত হইয়া বসবাস করিয়াছিলেন । সুতরাং সৰ্ব্ববিষয়ে তখন যশোর বঙ্গদেশে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করিয়াছিল। পুরাকালে এই রাজ্য সমৃদ্ধ ও শ্ৰীসম্পন্ন ছিল-প্রাচীন কীৰ্ত্তির অনেক ভগ্নাবশেষ তথায় দুর্লভ নহে। প্রতাপাদিত্য যশোবেশ্বলীর প্রস্তরময়ী মূৰ্ত্তি পাইয় তাহা অতি আড়ম্বরের সহিত প্ৰতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন। কথিত আছে এই বিগ্রহের প্রতি র্তাহার অচলা ভক্তি ছিল এবং এই জন্যই ভারতচন্দ্ৰ তাহাকে “বরপুত্র ভবানীর” বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন । যখন বসন্ত রায়ের আত্মীয় কুটবুদ্ধি রূপরাম বসু, কচু রায়কে লইয়া জাহাঙ্গীরের দরবারে তাহার হত্যার কথা জানাইল, সেই স্মরণীয় দিনে বাঙ্গলার স্বাধীনতার শেষ আশা-রশ্মি অস্তমিত হইল। মানসিংহ ১৬০৩ খৃষ্টাব্দে প্রতাপাদিত্যের বিরুদ্ধে উপস্থিত হইলেন, তিনি প্রতাপাদিত্যের নিকট একখানি তরবারি ও একটি বেড়ী (শৃঙ্খল) পাঠাইলেন। বেড়ী অধীনত্বের চিহ্ন-এবং তরবারি যুদ্ধের। কেশবভট্ট নকীব উচ্চৈঃস্বরে বলিলেন—“এই বেড়ী যেন মানসিংহ তাহার। প্ৰভু জাহাঙ্গীরের পায়ে পরাইয়া দেন”-“বেড়ি দিও আপনার মনিবের পায়ে” (ভারতচন্দ্র)। সাদরে তিনি তরবারিটী গ্ৰহণ করিয়া বেড়ী ফিরাইয়া দিলেন, তৎসঙ্গে রাজা মানসিংহ মোগলের আত্মীয়তা করিয়া যে জাতিচু্যত ও কুলচ্যুত হইয়াছেন, তাহাও বলিতে ছাড়িলেন না । ܩܝܒܩ মানসিংহ আকবরের নিকট যুদ্ধনীতি বিশেষরূপে শিক্ষা করিয়াছিলেন, পথে পথে